নাসিরনগরের মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ০১ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৫:২৪ অপরাহ্ণ   |   ৪০ বার পঠিত
নাসিরনগরের মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

ইপাজ খাঁ, মাধবপুর উপজেলা প্রতিনিধি:

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার এমপিওভুক্ত খান্দুরা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে গুরুতর আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক ও কর্মচারীরা গত ২৭ আগস্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে এই অভিযোগ দাখিল করেছেন।

 


 

অভিযোগে বলা হয়, টানা তিন বছর ধরে মাদ্রাসার বাজেটভুক্ত কোনো মেরামত বা উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়নি। বিভিন্ন ফান্ডের বিপুল অর্থের হিসাবও পাওয়া যাচ্ছে না। অভিযোগকারীরা জানান, মেয়াদোত্তীর্ণ ম্যানেজিং কমিটির নাম ব্যবহার করে বৈধ সভা ছাড়াই সুপার বড় ধরনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও উঠেছে।
 

শিক্ষকেরা অভিযোগ করেছেন, সুপার এককভাবে বিভিন্ন খাতের অর্থ ব্যবহার করছেন এবং স্বচ্ছ হিসাব দিচ্ছেন না। ভর্তির টাকা, মাঠ সংস্কার, ক্রীড়া সামগ্রী ক্রয়সহ নানা আর্থিক লেনদেনে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ, মানসিক নির্যাতন এবং অপমানজনক ভাষার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
 

শিক্ষক বদলি ও নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ এসেছে। নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়া হয়েছে এবং চলতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ করা হলেও তা অফিসিয়াল রেকর্ডে দেখানো হয়নি।
 

অভিযোগকারীরা বলেন, এসব অনিয়মের কারণে মাদ্রাসার স্বাভাবিক শিক্ষা পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে এবং শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। তারা দ্রুত তদন্ত করে সুপারের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রভাব ব্যবহার করে সুপার তাদের ভয়-ভীতি দেখাচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
 

অভিযুক্ত সুপার জহিরুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। অভিযোগগুলোর কোনো প্রমাণ নেই। কারও সমস্যা থাকলে আমি তা সমাধান করব।”
 

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জীবন ভট্টাচার্য জানান, “এমপিওভুক্ত মাদ্রাসা হওয়ায় আমাদের ক্ষমতা সীমিত। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।”


নাসিরনগরের ইউএনও শাহিনা নাসরিন বলেন, “শিক্ষকরা একবার নিজেদের মধ্যে আপসের চেষ্টা করেছিলেন। গুরুতর অভিযোগগুলো যাচাই করে শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”