ঢাকা প্রেস নিউজ
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার গণ–অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ঘটে। পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের মতামত চেয়ে রেফারেন্স পাঠান এবং তার ভিত্তিতে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ একটি রিট আবেদন করেন, যা হাইকোর্ট খারিজ করে দেয়।
হাইকোর্টের বেঞ্চ, বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে, গত ১৩ জানুয়ারি রিটটি সরাসরি খারিজ করে দেন। সম্প্রতি হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ আদেশ প্রকাশিত হয়েছে।
পূর্ণাঙ্গ আদেশে হাইকোর্ট জানিয়েছে, রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের উপদেষ্টামূলক মতামত গ্রহণ করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছেন, যা আইনসম্মত ও সমর্থিত। ২০২৪ সালের গণ–অভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা এবং এটি ভবিষ্যতেও জনগণের স্মৃতিতে থাকবে।
হাইকোর্ট আরও উল্লেখ করেছে যে, রিটটি ছিল ভ্রান্ত ধারণা, বিদ্বেষপূর্ণ এবং হয়রানিমূলক, তাই এটি সরাসরি খারিজ করা হয়। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিষ্ঠা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস হয়ে থাকবে এবং সুপ্রিম কোর্টের মতামত ও হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে এর বৈধতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত আইনসম্মত ঘোষণা করা হয়েছে, এবং হাইকোর্টের রায় একটি স্পষ্ট দিকনির্দেশনা প্রদান করেছে, যা ভবিষ্যতের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার জন্য একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এটি আইনি দলিল ও জনগণের ইচ্ছা দ্বারা সমর্থিত।
সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে সুপ্রিম কোর্টের উপদেষ্টামূলক এখতিয়ার সম্পর্কিত বিধান রয়েছে, যা রাষ্ট্রপতিকে বিশেষ পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের মতামত গ্রহণের সুযোগ প্রদান করে।
গত ডিসেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ রিটটি দায়ের করেছিলেন। রিট আবেদনকারী পক্ষের বক্তব্য ছিল যে, অন্তর্বর্তী সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংবিধানে নেই, তাই এই বিষয়ে রেফারেন্স চাওয়া যাবে না। তবে রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য ছিল যে, রেফারেন্সের বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলকে নোটিশ করা হয়েছিল এবং তিনি শুনানিতে অংশ নিয়েছিলেন।
আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ এবং এস এম মনিরুল আলম শুনানি করেন, এবং রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো. আবদুল ওয়াহাব শুনানি দেন।