আবুল কালাম আজাদ ভূঁইয়া, কুমিল্লা প্রতিনিধি:
কুমিল্লার হোমনা উপজেলায় তিতাস নদীর ভয়াবহ ভাঙনে নদীতীরবর্তী একাধিক গ্রামের কৃষিজমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েক একর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। একই সঙ্গে হুমকির মুখে পড়েছে বসতবাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিআইডব্লিউটিএর নদী খননের নামে প্রকৃত খনন না করে তিতাস নদীর দক্ষিণ ও পূর্ব পাড় ঘেঁষে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হয়েছে। একটি প্রভাবশালী চক্র এই বালু বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। এতে নদীর পূর্ব তীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং বর্ষা মৌসুমে পানির ঢেউ ও বালুবাহী নৌযানের ধাক্কায় চুনারচর, নোয়াগাঁও, কাউয়ারটেক ও কুড়ালিয়া কান্দি গ্রামের বিস্তীর্ণ কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, একটি চিহ্নিত বালু সিন্ডিকেট নদীপাড়ে নৌযান ভিড়িয়ে পাইপের মাধ্যমে নিয়মিত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করছে। এর ফলে প্রতিদিনই নদীভাঙন তীব্রতর হচ্ছে। যে কোনো মুহূর্তে ফসলি জমি ও বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন ভুক্তভোগীরা।
নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ও হোমিও চিকিৎসক ডা. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, “বালু সিন্ডিকেটের অবৈধ কার্যক্রমে নদীর পাড় ভেঙে যাচ্ছে। ঘরবাড়ি ও কৃষিজমির বড় ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু তারা প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। বাধা দিলে মিথ্যা মামলার ভয় দেখানো হয়।”
চুনারচর গ্রামের ভুক্তভোগী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, “প্রতিদিন বড় বড় বালুবাহী নৌযান চলাচলের সময় এমন ঢেউ ওঠে যে ঘরবাড়ি কেঁপে ওঠে। আমাদের ফসলি জমি নদীতে ভেঙে যাচ্ছে। প্রতিবাদ করলেই মিথ্যা মামলার হুমকি দেয়।”
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সালাউদ্দিন বলেন, “তিতাস নদী সংরক্ষণ ও অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।”
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, “আমি সদ্য দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”