ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট জাভেদ জারিফ পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে নিজের পদত্যাগপত্র প্রকাশ করে তিনি জানিয়েছেন, গত ছয় মাস তাঁর ৪০ বছরের রাজনৈতিক জীবনের ‘সবচেয়ে তিক্ত’ সময় পার করেছেন। এই সময়কালে তিনি ও তাঁর পরিবার চরম অপমান ও অপবাদ সহ্য করেছেন।
আনাদোলুর প্রতিবেদনে বলা হয়, জারিফের পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে প্রেসিডেন্টের দপ্তর কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। পদত্যাগপত্রে তিনি আরও উল্লেখ করেন, জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় চার দশকের রাজনৈতিক জীবনে নানা অপমান ও মিথ্যা অভিযোগের সম্মুখীন হয়েছেন। তিনি বলেন, “বিরামহীন মিথ্যা ও বক্তব্য বিকৃতির মধ্যেও দেশের স্বার্থে চুপ থেকেছি। আশা করছি, আমার পদত্যাগ সরকারের সফলতার পথে কোনো বাধা সৃষ্টি করবে না, বরং তা দূর করবে।”
জাভেদ জারিফ ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির আমলে আট বছর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৫ সালে পশ্চিমাদের সঙ্গে করা ইরানের পরমাণু চুক্তিতে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। সংস্কারপন্থী প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ক্ষমতায় আসার পর, তাঁকে কৌশলগতবিষয়ক পরামর্শদাতা হিসেবে নিয়োগ দেন। নির্বাচনী প্রচারে তিনি পেজেশকিয়ানের পক্ষে ভোট চেয়েছিলেন।
তবে জারিফকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দেখা দেয়। সমালোচকদের অভিযোগ, সংবিধান অনুযায়ী তাঁর এই নিয়োগ অবৈধ, কারণ তাঁর সন্তানেরা যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেছেন। রক্ষণশীল রাজনীতিবিদরা শুরু থেকেই তাঁকে অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
এদিকে, অর্থনীতির অব্যবস্থাপনা ও জাতীয় মুদ্রা রিয়ালের অবমূল্যায়নের দায়ে ইরানের পার্লামেন্ট অর্থমন্ত্রী আবদোলনাসের হিম্মাতিকে বরখাস্ত করেছে। রোববার পার্লামেন্টে এ বিষয়ে ভোট অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে হিম্মাতির বিরুদ্ধে ১৮২ জন এবং পক্ষে ৮৯ জন ভোট দেন।
এই ভোটের ফলে কার্যত নিশ্চিত হয়ে যায় হিম্মাতির বিদায়, যিনি সাত মাস আগে প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। তাঁর দায়িত্ব নেওয়ার সময় এক ডলারের বিপরীতে রিয়ালের মান ছিল ৫ লাখ ৯৫ হাজার ৫০০, যা বর্তমানে নেমে ৯ লাখ ২৭ হাজারে পৌঁছেছে।