প্রকাশকালঃ
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০১:৪৬ অপরাহ্ণ ২১৮ বার পঠিত
মার্কেটে কোনো ফায়ার সেফটি ছিল না। প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিংয়েরও কোনো ব্যবস্থাই ছিল না। ফুটপাত ও সড়কে দোকান থাকা ও মানুষের কারণে ফায়ার নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হয়েছে। এখানে পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও ছিল না।
আজ বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশনস অ্যান্ড ম্যানটেইন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম। এ সময় তিনি বলেন, '
মোহাম্মদপুর নতুন বাজার (কৃষি মার্কেট) আগুন ধরার খবর পেয়ে ৯ মিনিটের মাথায় আমরা এখানে চলে আসি। ৩টা ৫২ থেকে আমরা এখানে আগুন নির্বাপণের চেষ্টা করি। আমরা ৯টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছি।
১৭টি ইউনিটে ১৫০ জন ফায়ার ফাইটার কাজ করেছে। আমাদের সঙ্গে বিজিবি, পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী সহযোগিতা করেছে।' তিনি আরো বলেন, 'আগুন লাগা এই মার্কেটটিতে কোনো সেফটি প্ল্যান নাই। এই মার্কেটটিতে বারংবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং বিভিন্নভাবে গণসংযোগ করা হয়েছে।
সচেতনতার প্রগ্রাম যেভাবে আমরা করেছি, সেভাবে তারা সাড়া প্রদান করেন নাই। এই মার্কেটটা কিছুটা বঙ্গবাজার টাইপের। এখানে ভেতরের যতগুলো রাস্তা এবং বাইরের যে ছোট ছোট রাস্তা পুরোটাই বিভিন্ন মালামাল দিয়ে গাদাগাদি করে রাস্তাটা বন্ধ করা ছিল।
এবং পুরো মার্কেট টাইট ক্লাপসিবল গেট দিয়ে আটকানো ছিল।' তাজুল ইসলাম বলেন, 'এখানকার নাইট গার্ড যারা ছিলেন তারা বাইরে ছিলেন। তাদের খুঁজেই পাওয়া যায়নি তেমন একটা। আমাদের বেগ পেতে হয়েছে ভেতরে ফায়ার ফাইটারদের প্রবেশ করাতে।
তালা ভেঙে এবং ক্লাপসিবল গেট ভেঙে আমাদের ভেতরে গিয়ে তারপর আগুন নির্বাপণের চেষ্টা করতে হয়েছে। এ মার্কেটের বাইরেও বিভিন্নভাবে রাস্তাগুলো দখল করা ছিল। দোকানের সামনে ছোটখাটো দোকান আমাদের একটা কালচার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এগুলোর জন্য আমাদেরকে বেগ পেতে হয়।
আমরা আসার পরই আগুনের মাত্রা অনেক বেশি দেখেছি। একটা পর্যায়ে মার্কেটের প্রায় চার ভাগের তিন ভাগে সম্পূর্ণ আগুন ধরে যায় এবং আমরা চেষ্টা করি এই মার্কেটের ভেতরে যেন আগুনটা আবদ্ধ থাকে। আমাদের ফায়ার ফাইটাররা সর্বাত্মক চেষ্টা করে আগুনটাকে একটা জায়গায় সীমাবদ্ধ রাখতে পেরেছে।'
তিনি বলেন, 'আমরা এখন যেটা করছি আগুনটা নির্বাপণের চেষ্টা চলছে। আগুনটা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে, তবে নির্বাপণে কিছুটা সময় লাগবে।' এর আগে আগুন লেগেছে, তখন কি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেননি। সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, 'আমরা প্রতি সপ্তাহে শনিবারে গণসংযোগ করি।
এ ছাড়া বিভিন্ন সময় মার্কেটের প্রতিনিধিদের ডেকে আমরা অনেকবার আলোচনা করেছি, অনেক ওয়ার্কশপ করেছি। মার্কেটের যারা মালিকপক্ষ তাদের ডেকে আমরা বুঝিয়েছি, সচেতনতার প্রগ্রাম আমরা কিভাবে করব। প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিং ওনাদেরকেই করতে হবে। এই মার্কেটে প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিংয়ের কোনো ইকুইপমেন্টই ছিল না।
কোনো ধরনের পানির সোর্স ছিল না। আমরা সবচেয়ে বেশি বেগ পেয়েছি পানির সোর্স নিয়ে। এখানে বিভিন্ন ভবনে পানির সোর্স রয়েছে, কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। খুব দ্রুত আমাদের পানি শেষ হয়ে যায়। আমরা বিশেষ পানিবাহিত গাড়ি এনে এবং অন্যান্য বাহিনীর সহায়তায় এই কার্যক্রমগুলো করি।'
আগুন নেভানোয় এত সময় লাগার আরো বড় কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আগুন নেভানোর আরেকটি বড় কারণ ছিল মানুষের ভিড়। মানুষের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের পুলিশ, বিজিবি তারা খুবই হিমশিম খেয়েছে। এই ভিড়ের কারণে আমাদের এত সময় লেগেছে। যদিও মানুষ চেষ্টা করতে চায় আমাদেরকে সহযোগিতা করার জন্য কিন্তু আমাদের অনেক সময় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'আগুনের সূত্রপাত আমরা তদন্ত করে দেখার চেষ্টা করব জানার জন্য। তবে যতটুকু বুঝেছি মুদির দোকানের যেই অংশটি ছিল, ওই অংশ থেকে আগুনের সূত্রপাত। আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে যারা ছিল তাদের দু-একজন কিছুটা আহত হয়েছে। এর বাইরে কোনো বড় ধরনের হতাহতের তথ্য নেই।'