পুলিশ ভেরিফিকেশনে ‘রাজনৈতিক পরিচয়’ তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন। তিনি জানান, ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা অনুযায়ী ওয়ারেন্ট ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে হাইকোর্টের নির্দেশনা মানা বাধ্যতামূলক।
সোমবার বিকেলে সচিবালয়ে উপদেষ্টার দপ্তরে পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রথম বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি।
কমিশন প্রধান আরও বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৭ ধারার অধীনে রিমান্ড নেওয়ার ক্ষেত্রেও হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনা মেনে চলা প্রয়োজন। পাশাপাশি, ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেপ্তারের সময় গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির পরিবারকে অবহিত করতে হবে।
সভায় বিভিন্ন আইনি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, ৫৪ ধারা এবং ১৬৭ ধারার মতো কঠোর আইন সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ কমিশনের আওতায় নেই। এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত নিয়মাবলি মেনে চলা হবে। এজন্য আইন মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিবকে কমিশনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে ৫৪ ও ১৬৭ ধারার অপব্যবহার নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলছে। ব্লাস্ট নামে একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে করা একটি রিটে হাইকোর্ট নির্দেশনা দিয়েছিল—আইন প্রয়োগের সময় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। পরে সরকারের আপিলের পর অ্যাপিলেট ডিভিশনও এই নির্দেশনার পক্ষে রায় দেয়। নির্দেশনা অনুযায়ী, গ্রেপ্তার বা রিমান্ডের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হবে।"
পুলিশের দুর্নীতি নিয়ে সফর রাজ হোসেন বলেন, "দুর্নীতি আমাদের প্রধান শত্রু। এটি কমানো গেলে কর্মদক্ষতা বাড়বে এবং জনগণের মধ্যে আইনের প্রতি আস্থা তৈরি হবে।" তিনি জানান, পুলিশের বেতন কাঠামো উন্নয়নে আলোচনা চলছে এবং পরবর্তী সভায় এ বিষয়ে আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, "পুলিশসহ সব সরকারি বিভাগকে রাজনীতিমুক্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে। গত ১৫ বছরে আমরা দেখেছি, অনেক পুলিশ সদস্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দুর্নীতি করেছেন এবং পদোন্নতির চেষ্টা করেছেন। এটি বন্ধে কার্যকর সুপারিশ প্রণয়ন চলছে।"
সাদা পোশাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে এখনো কোনো সুপারিশ চূড়ান্ত হয়নি, তবে এ বিষয়ে শিগগিরই নির্দেশনা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।