প্রকাশকালঃ
০২ অক্টোবর ২০২৪ ০৬:৪১ অপরাহ্ণ ৩১২ বার পঠিত
ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের মধ্যে দ্বিতীয় হলো নামাজ। এটি অন্যতম ফরজ ইবাদত। পবিত্র কুরআনে ৮২ বার নামাজের কথা এসেছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই সালাত মুমিনদের ওপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরজ।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ১০৩)
অন্যদিকে ওয়াক্তমতো নামাজ আদায় করা খোদ মহান রবের নিকট প্রিয় একটি আমল। আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.) কে জিজ্ঞাসা করলাম, কোন আমল আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়? তিনি বললেন, যথাসময়ে সালাত আদায় করা। ইবনু মাসঊদ (রা.) পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, এরপর পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার। ইবনু মাসঊদ (রা.) আবার জিজ্ঞাসা করলেন, এরপর কোনটি?
রাসুল (সা.) বললেন, এরপর আল্লাহর পথে জিহাদ বা জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ্। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫০২)
এ ক্ষেত্রে দিনের শেষ ওয়াক্ত এশার ফরজ আদায়ের পর সুন্নতের পাশাপাশি বিতরের নামাজ আদায় করতে হয়। প্রায় অন্য ফরজ নামাজের মতো এটি হলেও নিয়মের ক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে দুই রাকাত নামাজ পড়ে প্রথম বৈঠকে বসতে হয় এবং তাশাহহুদ পড়তে হয়। পরে সালাম না ফিরিয়েই তৃতীয় রাকাতের জন্য উঠে দাঁড়িয়ে সুরা ফাতিহা পড়তে হয়। এরপর অন্য কোনো সুরা মেলানোর পর তাকবির বলে দুই হাত কান পর্যন্ত উঠাতে হয়।
পরবর্তীতে তাকবিরে তাহরিমার মতো হাত বেঁধে দোয়া কুনুত পড়তে হয়। এরপর আগের মতো রুকু ও সিজদা সম্পন্ন করে শেষে তাশাহহুদ, দরুদ শরীফ ও দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হয়। তবে প্রশ্ন হলো- এশার ওয়াক্তে বিতরের নামাজ পড়া উত্তম নাকি তাহাজ্জুদ আদায়ের পর?
এ ক্ষেত্রে হাদিস অনুযায়ী, এশার নামাজ আদায়ের পর থেকে সুবহে সাদিক (ফজরের ওয়াক্ত) শুরু হওয়া পর্যন্ত বিতরের নামাজ পড়া যায়। আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, হে কুরআনের অনুসারীগণ! তোমরা বিতরের নামাজ আদায় করো। কেননা আল্লাহ তা’আলা বেজোড় (একক), কাজেই তিনি বেজোড়কে (বিতর) ভালোবাসেন। (আবূ দাউদ, হাদিস: ১৪১৬)
এ ক্ষেত্রে কারও তাহাজ্জুদ পড়ার ইচ্ছে থাকলে তাকে এশার নামাজ আদায়ের পর বিতরের নামাজ বাকি রাখতে হবে, যা তাহাজ্জুদ আদায়ের পর উপরের নিয়মে আদায় করে নিতে হবে। আর তাহাজ্জুদের সময় যদি ঘুম থেকে উঠতে না পাড়ার সম্ভাবনা থাকে তবে এশার ওয়াক্তেই বিতর পড়ে নেয়া উত্তম। কারণ, রাসুল (সা.) বিতরের নামাজকে রাতের শেষ সালাত হিসেবে রাখতে বলেছেন। আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসুল (সা.) বলেছেন, বিতরকে তোমাদের রাতের শেষ সালাত (নামাজ) করবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৯৪৪)
আরেকটি হাদিসে এসেছে, জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কেউ শেষরাতে জাগতে পারবে না বলে আশঙ্কা করলে সে যেন রাতের প্রথমভাগেই বিতর পড়ে নেয়, অতঃপর ঘুমায়। আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি রাতের শেষভাগে সালাত (তাহাজ্জুদ) পড়ার আশা করে, সে যেন শেষরাতে বিতর পড়ে। কেননা শেষ রাতের কেরাত (শুনার জন্য ফেরেশতাদের) উপস্থিতির সময়। তাই তা অধিক উত্তম। (ইবনু মাজাহ, হাদিস: ১১৮৭)
অন্যদিকে খোদ রাসুল (সা.) ও বিতরকে রাতের শেষ নামাজ হিসেবে রাখতেন, আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) সালাত (রাতের নামাজ) আদায় করতেন, তখন আমি তার বিছানায় আড়াআড়িভাবে ঘুমিয়ে থাকতাম। এরপর তিনি যখন বিতর পড়ার ইচ্ছা করতেন, তখন আমাকে জাগিয়ে দিতেন এবং আমিও বিতর আদায় করে নিতাম। (সহিহ বুখারি, ৯৪৩)