ঈমান গ্রহণের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল ও অগ্রগণ্য ইবাদত হলো নামাজ। আল্লাহ তাআলার কাছে সবচেয়ে প্রিয় ও মর্যাদাশীল মানুষ হলেন মুমিনরা। আর পবিত্র কোরআনের বহু জায়গায় মুমিনদের একটি বড় পরিচয় ও প্রধান বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে যে তারা নামাজ কায়েম করে। এ গুণ ও পরিচয়ের মাধ্যমে মূলত আল্লাহ তাআলা মুমিনদের নিয়মিত নামাজ আদায়ের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন।
যেমন, আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘মুমিন তো তারাই, (যাদের সামনে) আল্লাহকে স্মরণ করা হলে তাদের হৃদয় ভীত হয় এবং যখন তাদের সামনে তাঁর আয়াত পড়া হয়, তখন তা তাদের ঈমান বাড়িয়ে দেয় এবং তারা তাদের প্রতিপালকের ওপর ভরসা করে। যারা নামাজ কায়েম করে এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে; তারাই সত্যিকারের মুমিন। তাদের জন্য তাদের প্রতিপালকের কাছে রয়েছে বহু মর্যাদা, ক্ষমা ও সম্মানজনক রিজিক।’ (সুরা : আনফাল, আয়াত : ২-৪)
এই আয়াতগুলোতে আল্লাহ তাআলা সত্যিকারের মুমিনের কিছু বৈশিষ্ট্য ও গুণ উল্লেখ করেছেন।
তাদের একটি গুণ হলো, তারা নামাজ কায়েম করে। এ থেকে বোঝা যায়, সত্যিকারের মুমিন হতে হলে নামাজ আদায় করতে হবে। নামাজ ছাড়া সত্যিকারের মুমিন হওয়া যাবে না। অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘ত্ব-সিন।
এ কোরআন ও সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত; মুমিনদের জন্য হিদায়াত ও সুসংবাদ—যারা নামাজ কায়েম করে, জাকাত আদায় করে এবং তারা আখিরাতে দৃঢ় বিশ্বাস রাখে।’ (সুরা : নামল, আয়াত : ১-৩)
এখানেও মুমিনদের পরিচয় বর্ণনা করতে গিয়ে প্রথমে নামাজের কথা বলেছেন। অন্য আয়াতে মুমিনদের বন্ধুর পরিচয় বর্ণনা করতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের বন্ধু তো শুধু আল্লাহ, তার রাসুল ও মুমিনরা, যারা নামাজ কায়েম করে, জাকাত আদায় করে এবং তারা বিনয়ী।’ (সুরা : মায়েদা, আয়াত : ৫৫)
এই আয়াতে তিন শ্রেণিকে আল্লাহ তাআলা মুমিনের বন্ধু বলে উল্লেখ করেছেন, ১. আল্লাহ ২. রাসুল, ৩. মুমিন। অতঃপর মুমিনদের পরিচয় ও বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে প্রথমে বলা হয়েছে, তারা নামাজ কায়েম করে।
সফলকাম মুমিনের পরিচয় বর্ণনা করতে গিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই সফলকাম হয়েছে মুমিনরা, যারা তাদের নামাজে বিনীত।’ (সুরা : মুমিনুন, আয়াত : ১)
কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব গ্রহণ করা হবে। যেমন এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব গ্রহণ করা হবে। যদি নামাজ ঠিক থাকে, তাহলে বাকি আমলও ঠিক হবে। আর যদি নামাজ খারাপ হয়, তবে বাকি আমলও খারাপ হবে।’ (মুজামে তাবারানি, আউসাত হাদিস : ১৮৫৯; জামে তিরমিজি, হাদিস : ৪১৩)
আল্লাহ তাআলা আমাদের গুরুত্বের সঙ্গে নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন।