যেসকল ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করেন মহান আল্লাহ্‌

প্রকাশকালঃ ০৭ জুন ২০২৩ ০৬:০৫ অপরাহ্ণ ১০৬ বার পঠিত
যেসকল ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করেন মহান আল্লাহ্‌

মানুষ স্বভাবত সদা অজ্ঞতা, উদাসীনতা, অক্ষমতা, খেয়ালখুশি, বিস্মৃতি ইত্যাদি ক্ষতিকর আচরণ দ্বারা প্রভাবিত হয়। ফলে সে স্বভাবতই ভুল করে বসে। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘আদমসন্তানের প্রত্যেকেই ভুলকারী। আর ভুলকারীদের মধ্যে তারাই উত্তম, যারা তাওবাকারী তথা সঠিক পথে প্রত্যাবর্তনকারী।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৪৯৯; ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪২৫১)

এই বাস্তবতাকে মনে রাখলে সব কাজ সঠিক পন্থায় গতি লাভ করতে পারে। ভুলের কারণে কথায় কথায় মানুষে মানুষে তুলনা করা থেকে আমাদের বিরত থাকা চাই। আর হ্যাঁ, এটাও খেয়াল রাখতে হবে যে জেনে-বুঝে ভুলকারী ও না জেনে-বুঝে ভুলকারীর মধ্যেও পার্থক্য আছে। এক হাদিসে এসেছে, মুগিরা ইবনে শুবা (রা.) বলেন, ‘একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) খাওয়াদাওয়া সেরেছেন, এমন সময় সালাতের আজান হলো।


তিনি সালাতের জন্য উঠে দাঁড়ালেন, এর আগে অবশ্য তিনি অজু করেছিলেন। কিন্তু তিনি অজু করবেন ভেবে আমি তাঁর কাছে পানির পাত্র নিয়ে এলাম। কিন্তু তিনি আমাকে তিরস্কার করে বললেন, পিছিয়ে যাও। আল্লাহর কসম, তাঁর এ আচরণে আমি মর্মাহত হই।

তাঁর সালাত শেষ হলে আমি ওমর (রা.)-এর কাছে আমার অনুযোগের কথা বললাম। তিনি বলেন, হে আল্লাহর নবী (সা.), আপনার তিরস্কার মুগিরার মনে খুব দাগ কেটেছে, সে ভয় পাচ্ছে যে তার জন্য আপনার মনে কোনো কষ্ট লেগেছে কি না। নবী করিম (সা.) বললেন, আমার মনে তার সম্পর্কে ভালো ছাড়া কোনো মন্দ ধারণা নেই। আমি যাতে অজু করি সে জন্য আমার কাছে সে পানি নিয়ে এসেছিল। আমি তো শুধু খাবার খেয়েছি।

তার পরও যদি আমি অজু করতাম তাহলে আমার পরবর্তী সময়ে লোকেরা খেয়েদেয়ে অজু করত।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৮২৪৪)


লক্ষণীয় যে এ ধরনের বড় মাপের পদস্থ সাহাবিদের কোনো কাজকে নবী করিম (সা.) কর্তৃক ভুল আখ্যায়িত করা তাদের মনে কোনো নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টির জন্য ছিল না। তারা অসন্তুষ্ট হবেন কিংবা তাঁর সাহচর্য ছেড়ে দেবেন—বিষয়টা সে জন্যও ছিল না; বরং এতে তাদের মনে একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেই তিনি তিরস্কার করেছিলেন। তবে কারো কোনো ভুল দেখলে ভুল থেকে সতর্কীকরণে কোনো পক্ষপাতিত্ব করা যাবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যখন তোমরা কথা বলবে তখন ন্যায়সংগত কথা বলবে।’ (সুরা : আনআম, আয়াত ১৫২)

রাসুল (সা.) আরো বলেন, ‘তোমাদের আগের জাতিগুলো এই কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে যে তাদের মধ্যকার অভিজাত কেউ চুরি করলে তারা তাকে মুক্ত করে দিত; কিন্তু দরিদ্র ও অভাবি শ্রেণির কেউ চুরি করলে তার ওপর দণ্ড কার্যকর করত। কিন্তু আমার বেলায়, যার হাতে আমার জান তার শপথ করে বলছি, মুহাম্মদের মেয়ে ফাতিমাও যদি চুরি করত তাহলে আমি তার হাত কেটে দিতাম।’ (বুখারি, হাদিস : ৩৪৭৫; মুসলিম, হাদিস : ১৬৮৮)