রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এই দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন খোরশেদ আলম। তিনি বলেন, “আমরা ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১৬ হাজার ২১৩ জন দীর্ঘদিন ধরে নিয়মতান্ত্রিকভাবে নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন করছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, এনটিআরসিএ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার আবেদন এবং বৈঠক করেছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ইতিবাচক সাড়া পেলেও এনটিআরসিএ শুরুতে অনীহা দেখায়। তাই আন্দোলন অব্যাহত রাখতে হয়।”
তিনি আরও জানান, “গত ১২ অক্টোবর শাহবাগে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও বিক্ষোভ শেষে রমনা বিভাগের ডিসি মাসুদের মাধ্যমে শিক্ষা সচিবের সঙ্গে পুনরায় দেখা করি। পরদিন ১৩ অক্টোবর ‘মার্চ টু এনটিআরসিএ’ কর্মসূচি ঘোষণা করি। এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা ব্যর্থ হলে আমরা এনটিআরসিএ ভবনের সামনে অবস্থান নেই। পরে রমনা বিভাগের ডিসি হস্তক্ষেপ করেন এবং তার মধ্যস্থতায় ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম ও অন্যান্য কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়।”
খোরশেদ আলম বলেন, “আমরা আশা করছি, এনটিআরসিএ দ্রুত শূন্যপদ সংগ্রহ করে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে ১৮তম নিবন্ধনে উত্তীর্ণ ১৬,২১৩ জন প্রার্থীর নিয়োগ সম্পন্ন করবে।”
তিনি আরও জানান, ২০১৩ সালের ৯ নভেম্বর এনটিআরসিএ শিক্ষক নিবন্ধন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সেখানে ১৮ লাখ ৬৫ হাজার ৭১৯ জন আবেদনকারী থেকে প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হয় ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৯১১ জন। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় ৮৩ হাজার ৮৬৫ জন এবং মৌখিক পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয় ৬০ হাজার ৫২১ জন।
এর মধ্যে গত ১৯ আগস্ট প্রকাশিত ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তিতে ১ লাখ ৮২২টি পদের বিপরীতে মাত্র ৪১ হাজার ৬২৭ জন সুপারিশ পেয়েছেন। ফলে ১৬ হাজার ২১৩ জন যোগ্য প্রার্থী নিয়োগবঞ্চিত রয়েছেন।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা রাষ্ট্র কর্তৃক যাচাইকৃত যোগ্য শিক্ষক। তবু নিয়োগ না পেয়ে হতাশা, মানসিক চাপ ও সামাজিক অবমূল্যায়নের শিকার হচ্ছি। অথচ দেশে এক লাখ ২০ হাজারেরও বেশি শিক্ষকপদ শূন্য রয়েছে। যোগ্য শিক্ষক না থাকায় এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফল খারাপ হচ্ছে, যা শিক্ষাব্যবস্থার নাজুক অবস্থার প্রতিফলন।”
তিনি বলেন, “জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাতা শিক্ষকরা বেকার হয়ে বসে থাকতে পারেন না। তাই সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের অনুরোধ—অতি দ্রুত এই বঞ্চনার অবসান ঘটিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুন।”
১. চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শূন্যপদ যুক্ত করে বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সুপারিশবঞ্চিত ১৬,২১৩ জন প্রার্থীর নিয়োগ সম্পন্ন করতে হবে।
২. নীতিমালা পরিবর্তনের আগে বিষয়ভিত্তিক বিশ্লেষণ ও প্রাতিষ্ঠানিক বাধা দূর করে বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ সকল প্রার্থীর নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তিতে সুপারিশবঞ্চিত প্রার্থী হাফিজুল ইসলাম, নিপা আক্তার, সৈকত, মো. আক্তারুজ্জামান, শিরিনা আক্তার, ইমরান হোসেন, রোকনুজ্জামান, সুলতানা প্রমুখ।