ঢাকা প্রেস,পাবনা (উত্তর) প্রতিনিধি:-
পাবনার বেড়া ও শাহাজাদপুর উপজেলার সীমান্ত দিয়ে প্রবাহিত হুড়াসাগর নদী এবং করশালিখা গ্রামের পলি মিশ্রিত মাঠে এবার সরিষার ফুলের সুবাস ছড়িয়ে পড়েছে। পুরো মাঠজুড়ে দিগন্তরেখা পর্যন্ত হলুদের বিস্তার। চরের ফসলি মাঠের চারপাশে ছড়িয়ে আছে সরিষার মিষ্টি গন্ধ আর সৌরভ। গার হলুদ বর্ণের এই ফুলে মধু আহরণের জন্য মৌ-মাছিরা গুনগুন করছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দূর থেকে সরিষার খেতগুলো যেন এক সোনালী চাদর বিছানো হয়েছে। রোদে ঝলমলে এই খেতগুলো হলুদের সমারোহে সজ্জিত। প্রতিটি সরিষার ফুলে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন দুলছে, যা গ্রামীণ অর্থনীতিতে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করছে। শীতের কুয়াশা উপেক্ষা করে চাষিরা নিজেদের ক্ষেতের যত্ন নিচ্ছেন, আর সরিষার ফুলের সৌন্দর্য মাঠে মাঠে ছড়িয়ে পড়েছে।
আবহাওয়া অনুকূল থাকায়, চাষিরা এবার ভাল ফলনের আশা করছেন। মাঠের পর মাঠ সরিষা ফুলে ভরা, যা প্রকৃতিকে এক নতুন মাত্রা দিয়েছে। যে কোনো মাঠে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে সোনাঝরা এই ফুলের স্রোত।
পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে পাবনার নয় উপজেলায় সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৩ হাজার ৫৬৫ হেক্টর জমি। কিন্তু কৃষকরা এবার ৩৭ হাজার ৯৭৪ হেক্টরে সরিষা চাষ করেছেন। প্রতি হেক্টরে দুই টন উৎপাদন আশা করা হচ্ছে, যার মোট লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়িয়েছে ৭৫ হাজার ৯৪৮ টন।
যমুনার চরনাগদা গ্রামের বর্গাচাষি আশরাফ জানান, তিনি চার বিঘা জমিতে তিন ধরনের সরিষা আবাদ করেছেন। সরিষা ফুলে ক্ষেত ভরে গেছে, যা দেখতে খুব ভালো লাগছে।
পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. জামাল উদ্দিন বলেন, চলতি মৌসুমে সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম কারণ গত বছরের ভালো দাম। ফলে, চাষিরা এবার সরিষার চাষে আরো বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এবছর জেলা সদর, বেড়া, সাঁথিয়া, সুজানগর, ঈশ্বরদী, আটঘরিয়া, চাটমোহর, ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া উপজেলায় সরিষার আবাদ প্রায় ৩৭ হাজার ৯৭৪ হেক্টরে পৌঁছেছে। কৃষি বিভাগের সরবরাহকৃত উন্নত বীজ ও সারের মাধ্যমে চাষিরা সফলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।