 
                            
জুলাই সনদের অধীনে আইনি ভিত্তিতে নিরপেক্ষ নির্বাচন দাবি করে গতকাল বুধবার রাজধানীতে মিছিল ও সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামী। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের স্পষ্টভাবে বলেন, “আগে জুলাই সনদ, পরে নির্বাচন হবে।” তিনি জানান, ভোট হবে ভোটের অনুপাত (পিআর) পদ্ধতিতে, যা ৭১ শতাংশ মানুষ সমর্থন করে। তাঁর ভাষায়, “জামায়াত ইলেকশন চায়, সিলেকশন নয়।”
 
বিকেল ৫টায় বিজয়নগর পানির ট্যাঙ্কির সামনে ট্রাকে নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জামায়াতের এই বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়। তবে বিকেল ৩টা থেকেই মঞ্চ প্রস্তুতির কারণে বিজয়নগর মোড় থেকে পল্টনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে ৫টার পর পল্টন থেকে বিজয়নগরমুখী সড়কও বন্ধ হয়ে পড়ে।
 
অফিস ছুটির সময় সড়ক বন্ধ থাকায় আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়, ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। সমাবেশ শেষে পল্টন মোড় হয়ে কাকরাইল পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষের মিছিল গেলে দুর্ভোগ আরও বাড়ে।
 
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল। বক্তব্যে ডা. তাহের বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, “অধিকাংশ দলই জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে মত, ভিন্নমত ও নোট দিয়েছে। তবু একটি দল বলছে, এর আইনি ভিত্তি নেই। সরকারও মুখে স্বীকার করছে, কিন্তু বাস্তবায়ন না করলে ইমান থাকে?”
 
প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই দফা সংলাপের পর জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়ন করছে, যেখানে সংস্কারের ধরন ও বাস্তবায়নের পথনকশা থাকবে। বিএনপি চায় সংস্কার হবে নির্বাচনের পর, কিন্তু জামায়াতের দাবি ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের আগেই সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে।
 
ডা. তাহের সতর্ক করে বলেন, “বিদেশি নকশায় সাজানো নির্বাচন হলে জনগণ জীবন ও রক্ত দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন আদায় করবে।” তিনি অভিযোগ করেন, “সংস্কারে ঐকমত্য হওয়ার পরও একটি দল বলছে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নেই—তাহলে কী সংস্কার হয়েছে?”
 
২৫ বছরের রাজনৈতিক মিত্র বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “অনেকে বলে, পিআর বোঝে না। জরিপে এসেছে ৭১ শতাংশ মানুষ পিআর চায়—মানে জনগণ বোঝে, আপনি বুঝেও বোঝেন না! গণতন্ত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতই মানতে হবে।”
 
দেশকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ডা. তাহের বলেন, “আরেকটি এক-এগারোর পরিস্থিতি সৃষ্টি করবেন না। আসুন, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথ তৈরি করি, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করি এবং সংস্কারকে আইনি ভিত্তি দিই—এ কাজে এক সপ্তাহের বেশি লাগবে না।”
 
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম, আবদুল হালিম ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন প্রমুখ।
 
                                        
                                        
                                     
                                        
                                        
                                     
                                        
                                        
                                     
                                        
                                         
                                        
                                        
                                    