আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলায় কদোয়া চাষ করে দ্বিগুণ লাভ করছেন চাষিরা। এ সবজি চাষে লোকসানের সম্ভাবনা কম থাকায় এলাকার অনেক কৃষক কদোয়া চাষে ঝুঁকছেন।
তবে তীব্র তাপদাহে জমিতে রস না থাকার কারণে সবজি চাষে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে বৃষ্টি হলে কদোয়ার ফলন অনেক বেশি হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা। কদোয়া চাষে আর্থিক সচ্ছলতা ও স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন এ অঞ্চলের কৃষকেরা। ধান উৎপাদনে খরচ বেশি, লাভ কম হওয়ায় ধান ও পাটের পরিবর্তে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষে ঝুঁকছেন কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ১ হাজার ৯০ হেক্টর অর্জিত হয়েছে। কদোয়া একটি লাভজনক ফসল। কদোয়া চাষিদের উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেওয়া অব্যাহত রয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কদোয়া চাষে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। খরচের দ্বিগুণ লাভের আশা করছেন তারা। কদোয়ায় লোকসানের সম্ভাবনা অনেক কম থাকায় দিনে দিনে কদোয়া চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষকেরা জানান, কদোয়া চাষ একটি লাভজনক ফসল। বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় দামও ভালো পাওয়া যায়। সবজির মধ্যে কদোয়া সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে ক্রেতাদের চাহিদা থাকে। এছাড়া ধান উৎপাদনে খরচ বেশি, লাভ কম। তাই ধান-পাটের পরিবর্তে কদোয়া চাষে ঝুঁকছেন উপজেলার কৃষকেরা।
উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ দলদলিয়া টাপুরকুটি এলাকার আইয়ুব আলী জানান, এবারে তিনি ২০ শতক জমিতে কদোয়ার চাষ করেছেন। কদোয়া বাজারজাত করা পর্যন্ত খরচ করেছেন প্রায় ৮ হাজার টাকা, আরও খরচ হবে প্রায় ২ হাজার টাকা। মোট খরচ হবে ১০ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত কদোয়া বাজারে বিক্রি করেছেন ১৫ মণ। প্রতি মণ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি করে আয় হয়েছে ১২ হাজার টাকা। যে হারে কদোয়া ধরেছে, তাতে আরও ১২ মণ কদোয়া হবে বলে জানান। যার বাজারমূল্য হবে প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। মোট আয়ের আশা করছেন ২২ হাজার টাকা, যা খরচের দ্বিগুণ লাভ।
এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কদোয়া চাষিদের মধ্যে মতিয়ার রহমান, নুরুদ্দিন মিয়া, রমজান আলী, কাইয়ুম ও আনিছুর রহমানসহ আরও অনেকে বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবারে কদোয়ার বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে তীব্র তাপদাহের কারণে অনেক জায়গায় কদোয়ার ফলন কিছুটা কম হয়েছে। তাছাড়া অল্প খরচে, অল্প সময়ে দ্বিগুণ লাভ করা যায় কদোয়া চাষে। যে কারণে দিনদিন কদোয়া চাষের প্রতি ঝুঁকছেন এলাকার কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোশাররফ হোসেন বলেন, কদোয়ার চাষ একটি লাভজনক ফসল, যা অল্প খরচে দ্বিগুণ লাভ করা সম্ভব। এছাড়া ফলন ও দাম ভালো থাকায় দিন দিন কদোয়ার চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কদোয়া চাষিদের উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই প্রতিরোধ ও পরামর্শ প্রদান অব্যাহত রয়েছে।