খু‌ড়ি‌য়ে খু‌ড়ি‌য়ে চল‌ছে শেরপু‌রের তৃতীয় লি‌ঙ্গের আবাসন কেন্দ্রটি 

প্রকাশকালঃ ০৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:৪৪ অপরাহ্ণ ০ বার পঠিত
খু‌ড়ি‌য়ে খু‌ড়ি‌য়ে চল‌ছে শেরপু‌রের তৃতীয় লি‌ঙ্গের আবাসন কেন্দ্রটি 

ঢাকা প্রেস,নিজস্ব প্রতিনিধি:-

 

অযত্ন আর অব‌হেলায় খু‌ড়ি‌য়ে খু‌ড়ি‌য়ে চল‌ছে শেরপু‌রে তৃতীয় লি‌ঙ্গের জন‌গোষ্ঠী হিজরা‌দের একমাত্র  আবাসন কেন্দ্রটি ।

 

সম্প্রতি রাজ‌নৈ‌তিক পট পরিবর্তনের পর দুর্বৃত্তরা হামলা চালায় প‌ল্লি‌টি‌তে ।এতে আবাসন কেন্দ্রটির অনেক জি‌নিজপত্র খোয়া গেছে বলে অভিযোগ ক‌রেন আবাস‌নে বসবাসরত হিজরারা ।

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান বিষয়‌টি জানলাম পর্যবেক্ষন ক‌রে প্রয়োজনীয় পদ‌ক্ষেপ গ্রহন ক‌রা হবে। 

 

জানা যায়,২০২১ সা‌লের ৭ জুন শেরপুর সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের আন্ধারিয়া সুতিরপাড় এলাকায়  জেলা প্রশাসনের উদ্দ্যো‌গে ২ একর  জ‌মির ওপর নির্মিত হয় হিজরা‌দের এই আবাসন পল্লী‌টি । সেই সময়  হিজড়া জনগোষ্ঠির ৪০ জনের মাঝে জমি সহ ঘরবাড়ী বু‌ঝি‌য়ে দেন তৎকা‌লিন জেলা প্রশাসক আনারক‌লি মাহবুব । সেখানে বসবাসরত হিজড়ারা জানায়, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর গত ৪‌ সে‌প্টেম্বর  দুর্বৃত্তরা হামলা করে ঘরের আসবাবপত্র গ্যাসের চুলা টিউবওয়েল সহ সমস্ত কিছু লুট করে নিয়ে যায়। লুট হওয়া মালামাল ফেরত এবং দুর্বৃত্তদের বিচারের দাবিতে  মাঠে নামে হিজড়া সম্প্রদায়। তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি,  মানববন্ধন, মিছিল করেও কোন প্রতিকার পাননি। পরবর্তীতে হিজড়া পল্লীতে হামলার  বিষয়টি তৎকালীন শেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হযরত আলীর নজরে আসলে তিনি দলীয় নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে হিজড়াদের পুনরায় আবাসন কেন্দ্রটিতে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দেন। বর্তমানে  অনেকটাই কষ্টে  বসবাস কর‌তে হ‌চ্ছে এখানকার হিজড়া জনগোষ্ঠীর। 

 

হিজরা আখি আক্তার বলেন,আমরা ভিক্ষাবৃত্তি নয় আমরা কর্মের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে চাই। আমাদেরকে যেন কর্মের সুযোগ করে দেয় সেটাই আমাদের সরকারের কাছে দাবি জানাই।


শেরপুর জেলা হিজড়া কল্যাণ সমিতির সভাপতি নিশি সরকার বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে আমাদেরকে আবাসনের ব্যবস্থা  করে দিলেও ৪ সেপ্টেম্বর দুর্বৃত্তদের হামলার পর প্রশাসন থেকে কোন খোঁজ খবর আমাদের নেয় নাই। বিএনপি নেতা হযরত আলী অভিভাবকের দায়িত্ব নিয়ে পুনরায় আমাদেরকে আবাসনে ফিরিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু এক সময় আমরা সরকারি যে সমস্ত সুযোগ সুবিধা পেতাম এখন আর আমরা পাচ্ছি না। আমাদের হিজড়াদের দাবি সরকার যেন আমাদেরকে পুনরায় সরকারি  সুযোগ সুবিধা দিয়ে আমাদেরকে সহযোগিতা করেন।

 

শেরপুর জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী জানান, হিজড়া পল্লীতে দুর্বৃত্তদের হামলার খবরটি শোনার পর আমি দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে তাদেরকে পুনরায় পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছি আসবাবপত্র কিনে দিয়েছি এবং নগদ টাকাও দিয়েছি। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত তাদেরকে  স্থায়ীভাবে কর্মের  ব্যবস্থা করে দেওয়া।


সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভূঁইয়া জানান,শেরপুর সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের আন্ধারিয়া সুতিরপাড় এলাকায় অবস্থিত তৃতীয় লিঙ্গের আবাসন কেন্দ্রটি নানান সমস্যায় জর্জরিত। এটি প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তৃতীয় লিঙ্গের কেউ যদি সমস্যাগুলো  লিখিতভাবে প্রশাসন বরাবর জানায় তাহলে প্রশাসন তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

 

আবাস‌নের  দুরাবস্থায় এখন ম‌নের ক‌ষ্টে কখ‌নো গান ক‌রেন , আবার ম‌নের আন‌ন্দে নে‌চে গে‌য়ে দিন কাটান , আবার পে‌টের জন‌্য  দ্বা‌রে দ্বা‌রে  ঘু‌রে বেড়ান এই হিজরারা