ঢাকা প্রেস,হাতিয়া প্রতিনিধি:-
নোয়াখালীর হাতিয়ায় সাগরে মাছ ধরার ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা আজ রাত ১২টা থেকে শেষ হচ্ছে। এই নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় জেলেরা আনন্দে ফেটে পড়েছেন। তারা সারা রাত জেগে নৌকা-জাল মেরামত করে, নতুন করে মাছ ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
হাতিয়ার বিভিন্ন ঘাটে গেলে চিত্রটা আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। জেলেরা ব্যস্ততার সাথে নৌকা সাজাচ্ছে, জাল বুনছে, নৌকা ধোয়া-মোছা করছে। বড় বড় ফিশিং ট্রলারগুলো আইস আর অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে নিচ্ছে। সুনশান নীরব ঘাটগুলো এখন কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে।
হাতিয়ার সূর্যমুখী ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলা উদ্দিন জানান, হাতিয়াতে প্রায় ১০ হাজার জেলে নৌকা রয়েছে। এসব নৌকায় ১০ জন করে হলেও একলাখ লোক এই জেলে পেশার সাথে জড়িত। মা ইলিশ সংরক্ষণের জন্য গত ২২ দিন এসব জেলেরা বেকার ছিল।
সূর্যমুখী ঘাটের একজন জেলে বলেন, "গত ২২ দিন আমরা বেকার ছিলাম। আয়-রোজগার বন্ধ ছিল। এখন আবার মাছ ধরতে যাব। আশা করি ভালো মাছ ধরতে পারব।"
আরেকজন জেলে জানান, "এ বছর মৌসুমের শুরু থেকে ভালো মাছ পাওয়া যায়নি। অনেক জেলে নৌকা এখনো ঋণগ্রস্ত অবস্থায় আছে।"
উপজেলার কাজির বাজার ঘাটের জেলে নাজিম উদ্দিন জানান, নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারিভাবে ২৫ কেজি চাল পেয়েছেন। কিন্তু এক পরিবার চালাতে এটা যথেষ্ট নয়। অন্যদের মতো তাকেও অন্যের কাছ থেকে টাকা ধার করতে হয়েছে।
হাতিয়া ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি রাশেদ উদ্দিন জানান, হাতিয়াতে ২ শতাধিক ট্রলার রয়েছে। গত ২২ দিন এসব ট্রলারের জেলের পরিবারের ভরণ পোষণ ট্রলার মালিকদের করতে হয়েছে। এ বছর ট্রলার মালিকরাও আর্থিকভাবে লোকসান গুনছেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফাহাদ হাসান বলেন, নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে পালন করা হয়েছে। এ সময় নদীতে ও সাগরে প্রশাসন কঠোর ভাবে অভিযান পরিচালনা করে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় কিছু জেলেকে আটক করা হয়েছে। এ বছর প্রণোদনা হিসেবে হাতিয়াতে ১২ হাজার জেলেকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা উঠে মাছ ধরার জন্য জেলেরা আনন্দিত হলেও অনেকেই আর্থিক সংকটের মধ্যে রয়েছেন। সরকারি সহায়তা যদি আরও বৃদ্ধি পায় তাহলে জেলেরা কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন।