পশ্চিমবঙ্গকে কেউ কেউ বাংলাদেশ মনে করছেন: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রকাশকালঃ
২৯ আগu ২০২৪ ০১:৫৬ অপরাহ্ণ ৫৭৬ বার পঠিত
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গকে কেউ কেউ বাংলাদেশ মনে করছেন। আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি। তারা আমাদের মতো কথা বলে। তাদের সংস্কৃতি আর আমাদের সংস্কৃতি এক। কিন্তু মনে রাখবেন, বাংলাদেশ একটা আলাদা রাষ্ট্র। ভারতবর্ষ একটা আলাদা রাষ্ট্র। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সতর্ক করে তিনি বলেন, মনে রাখবেন, পশ্চিমবঙ্গে যদি আগুন লাগান, আসামও থেমে থাকবে না। উত্তর-পূর্বাঞ্চলও থেমে থাকবে না। উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ডও থেমে থাকবে না। আর দিল্লিও থেমে থাকবে না। আপনার চেয়ার আমরা টলমল করে দেব।
গতকাল বুধবার কলকাতায় তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে এক ছাত্র সমাবেশে এসব কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর জি করের চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা প্রসঙ্গে মমতা বলেন, চেয়েছিলাম অভিযুক্তকে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে নিয়ে গিয়ে ফাঁসি দিতে। ধর্ষণ করলে একমাত্র শাস্তি ফাঁসি, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হাতে ক্ষমতা থাকলে সাত দিনে ফাঁসি দিতাম। আগামী সপ্তাহে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধিবেশন ডেকে ধর্ষণবিরোধী বিল পাশ করাব। তিনি বলেন, প্রতিবাদের আড়ালে বিজেপি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করতে চাইছে। তাই তদন্তের অগ্রগতির ওপর জোর না দিয়ে, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা না চেয়ে আমার পদত্যাগ দাবি করছে।
মমতার বক্তব্যের পালটায় বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, মমতা যেভাবে আসাম, মণিপুর, উত্তর-পূর্ব ভারত অশান্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন, তা বাংলাদেশের জামায়াতের ভাষা, ভারতবিরোধী শক্তির ভাষা। ভারতের কেন্দ্রীয় সংস্থা, যারা দেশের জাতীয় নিরাপত্তার দিকটি দেখেন, তাদের বলব সতর্ক নজর রাখুন। কোনো বিদেশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়র সঙ্গে বৈঠক করছেন কি-না, কোনো বিদেশি শক্তির সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে কি-না, সে ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন।
গতকাল পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ডাকে ১২ ঘণ্টার বন্ধ্ পালিত হয়েছে। কলকাতায় আর জি কর হাসপাতালে এক নারী চিকিত্সককে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে মঙ্গলবার নবান্ন অভিযান কর্মসূচি পালনের সময় বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের লাঠিপেটার ঘটনায় এ বন্ধ ডাকা হয়। ১২ ঘণ্টার এই অবরোধ কর্মসূচিতে সকাল থেকেই রাজ্যে রেল যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়। এছাড়া সংঘাত ও গুলির ঘটনাও ঘটেছে।
রাজ্য বিজেপির নেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি তুলেছেন, রাজ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে রাজ্যপাল যেন অবিলম্বে রাষ্ট্রপতি শাসনের জন্য সুপারিশ করেন। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মানুষ মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে আর চায় না। মুখ্যমন্ত্রী নারী চিকিৎসক হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বাঁচাতে নানা খেলা খেলছেন। মানুষ আজ তা বুঝতে পেরে তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে। আর পশ্চিমবঙ্গে পুলিশকে যেভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, যে অত্যাচার করা হচ্ছে—তার ফল খারাপ হবে। কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অবস্থা বাংলাদেশের চেয়েও খারাপ হবে।