বৈদ্যুতিক শিল্পনগরী প্রস্তুত মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ীতে, মিলছে না ক্রেতা

প্রকাশকালঃ ১৯ মার্চ ২০২৩ ০২:৩৯ অপরাহ্ণ ১২৭ বার পঠিত
বৈদ্যুতিক শিল্পনগরী প্রস্তুত মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ীতে, মিলছে না ক্রেতা

মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ীতে বৈদ্যুতিক শিল্পনগরী সম্পূর্ণ প্রস্তুত হলেও শিল্প প্লটের ক্রেতা খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। শিল্পোদ্যোক্তাদের জন্য দুইবার প্লটের মূল্য কমিয়ে বরাদ্দ দিতে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প (বিসিক) প্রস্তুত থাকলেও ক্রেতা নেই। ৩১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই শিল্পনগরীর ৩৬১টি প্লটের মধ্যে আবেদন পড়েছে মাত্র ২০টির মতো। প্লট ক্রেতাদের আগ্রহ কম থাকায় শিল্পনগরীটি বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। ফলে তৃতীয়বারের মতো দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুন্সীগঞ্জ বিসিক কর্তৃপক্ষ।

খোজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানী ঢাকার নবাবপুর, ধোলাইখাল ও কামরাঙ্গীরচরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বৈদ্যুতিক পণ্য ও হালকা প্রকৌশল শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো নির্দিষ্ট একটি জায়গায় স্থানান্তরের উদ্দেশ্যে টঙ্গিবাড়ীতে ইলেকট্রনিক শিল্পনগরী গড়ে তোলে সরকার। ঢাকার পোস্তগোলা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে টঙ্গিবাড়ীর বেতকা ইউনিয়নের ইছামতী নদীর তীরে ৫০ একর জমির ওপর ২০১৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ইলেকট্রনিক শিল্পনগরী গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়। বালু ভরাটের মধ্য দিয়ে প্লট তৈরির কাজ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। সেখানে ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে প্রশস্ত রাস্তা, ড্রেন, কালভার্ট, প্রশাসনিক ভবন, পুকুর ও ডাম্পিং ইয়ার্ড। সাত বছর আগে কাজ শুরু হওয়া শিল্পনগরী এখন কলকারখানা স্থাপনের জন্য শতভাগ প্রস্তুত। টঙ্গিবাড়ীর ইছামতী নদীর তীরে এই শিল্পনগরী প্রস্তুত হলেও এখন পর্যন্ত কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান নির্মাণের কাজ শুরু হয়নি। সব মিলিয়ে বিশেষায়িত এই শিল্পনগরী চালু হওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।

বিসিক সূত্রে জানা যায়, এই শিল্পনগরীতে অন্তত ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। শিল্পনগরীটি গড়ে তুলতে ব্যয় হয়েছে ৩১৭ কোটি টাকা। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ইলেকট্রনিক শিল্পনগরীর কোনো প্লটেই বৈদ্যুতিক পণ্যের শিল্পপ্রতিষ্ঠান নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে পদ্মা সেতু হয়ে সহজ সড়ক যোগাযোগ ছাড়াও এই শিল্পনগরী থেকে সড়কপথে ঢাকা যেতে সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর হয়ে সময় লাগবে ২০ মিনিট থেকে আধাঘণ্টা। রাজধানীসহ বিভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গে রয়েছে সহজতর নৌ যোগাযোগব্যবস্থা।

দুই দফা কমিয়ে এই শিল্পনগরীর প্লট বিক্রিতে প্রতি শতাংশের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে আট লাখ ১০ হাজার টাকা করে। শিল্পনগরীতে প্লট তৈরি করা হয়েছে ৩৬১টি। একেকটি প্লট যথাক্রমে ৭, ১০ ও ১৪ শতাংশ আয়তনের। কিন্তু হাতে গোনা কিছু প্লটের জন্য আবেদন জমা ছাড়া অবিক্রীত থেকে গেছে সব প্লটই। এ ছাড়া সেখানে বিদ্যুতের ২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার হাইভোল্টের সাবস্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। ইলেকট্রনিক শিল্পনগরী কলকারখানা স্থাপনের জন্য শতভাগ প্রস্তুত বলে জানান সম্প্রসারণ কর্মকর্তা (প্রকল্প পরিচালক) মো. আবদুল জলিল তালুকদার।

তিনি জানান, এই শিল্পনগরীতে বৈদ্যুতিক সব ধরনের পণ্য ও গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরির শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। নতুন করে এই মাসের শেষের দিকে আবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্লট বিক্রি বৃদ্ধি করা হবে। মুন্সীগঞ্জ বিসিকের ব্যবস্থাপক মো. আবদুল্লাহ জানান, এরই মধ্যে ২০টির মতো শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্লট বরাদ্দপ্রাপ্তির জন্য আবেদন করেছে। উদ্যোক্তারা বলছেন, ‘প্লটের দাম বেশি। আমরা তৃতীয়বারের মতো দাম কমিয়ে প্লট বরাদ্দ দেওয়ার চেষ্টা করছি। তা ছাড়া শিল্পনগরী থেকে ঢাকায় যেতে মোল্লাবাজার ব্রিজের নির্মাণকাজ শেষ হলে উদ্যোক্তারা প্লট এরিয়ায় এসে দেখে গেলে তাঁদের প্লট নেওয়ার আগ্রহ বাড়বে।’