নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট। এই রায় নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার।
আজ মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রায় ঘোষণার পর বদিউল আলম মজুমদার তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “আমি অত্যন্ত আনন্দিত এবং সন্তুষ্ট। এটি একটি ঐতিহাসিক ও সেমিনাল রায়।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই রায়ের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পুনঃপ্রতিষ্ঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ তৈরি হয়েছে। তবে এর বাস্তবায়ন নির্ভর করবে ভবিষ্যতে সবার আচরণের ওপর।
তিনি বলেন, “গণতন্ত্র ফিরে আসা মানে রাজনৈতিক ও সামাজিক আচরণে পরিবর্তন আনা। রাজনীতিবিদদেরসহ সবাই যদি নিজেদের দায়িত্ব পালন করেন, তবেই গণতান্ত্রিক উত্তরণ সম্ভব হবে।”
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান আরও জানান, দুইভাবে কর্তৃত্ববাদী সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। প্রথমত, ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়। দ্বিতীয়ত, সংবিধানে ৭(ক) অনুচ্ছেদ যুক্ত করা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, “আমিসহ অনেকেই এ বিষয়ে সোচ্চার ছিলাম। আদালত আমাদের এ প্রচেষ্টার স্বীকৃতি দিয়েছেন, ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।”
শেষে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “চরম প্রতিকূলতার মধ্যেও আমরা নাগরিকদের অধিকার রক্ষায় লড়াই করেছি। সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কার্যকর করতে আমরা রিট করেছি। আজকের এই রায়ে আমি পুরো দেশবাসীর জন্য আনন্দিত।”
প্রসঙ্গত, পঞ্চদশ সংশোধনী আইন চ্যালেঞ্জ করে গত ১৮ আগস্ট সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন বিশিষ্ট ব্যক্তি রিট করেছিলেন। প্রাথমিক শুনানির পর হাইকোর্ট ১৯ আগস্ট রুল জারি করেন। এই রুলে বিএনপি, গণফোরাম, জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকজন ইন্টারভেনার হিসেবে যুক্ত হন। আদালতে বিভিন্ন পক্ষের আইনজীবীরা তাদের যুক্তি তুলে ধরেন।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৩০ জুন পঞ্চদশ সংশোধনী আইন জাতীয় সংসদে পাস হয়, যেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা হয় এবং শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।