ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি কর্মসূচি ঘোষণা
প্রকাশকালঃ
০৪ জুন ২০২৪ ০১:৪২ অপরাহ্ণ ৫৫৩ বার পঠিত
গত অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনে লাগাতার নির্বিচারে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরাইল। এতে জানমালের ব্যাপক ক্ষতির পাশাপাশি দেশটির শিক্ষাব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন এক প্রকার থমকে গেছে বলা যায়। এমন পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনের শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন পাকিস্তানের নোবেলজয়ী অধিকারকর্মী মালালা ইউসুফজাই।
সম্প্রতি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যায়ের এক নৈশভোজে অংশ নিয়ে মালালা শুধুমাত্র ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বিশেষ বৃত্তি কর্মসূচির ঘোষণা করে। গাজায় চলমান ইসরাইলি ধ্বংসযজ্ঞের ফলে যে ফিলিস্তিনের শিক্ষাক্ষেত্রের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে সে বিষয়টি সামনে এনে মালালা বলেন, ‘গাজার ৮০ শতাংশের বেশি স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।’
তাই জরুরিভিত্তিতে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনর্নির্মাণে জোর দিয়েছেন এই নোবেলজয়ী অধিকারকর্মী। ‘গাজায় আশু যুদ্ধবিরতি এবং এরপর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্নির্মাণ দরকার।’ দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনের চলমান লড়াইয়ে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে মালাল যোগ করেন, ‘ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের গল্পগুলো আমাদের ছড়িয়ে দেওয়া দরকার।
এছাড়া তাদের সরাসরি তহবিল সরবরাহ করতে হবে। এই বৃত্তির মাধ্যমে আমরা শুধু তাদের আর্থিক সাহায্য দিচ্ছি তা নয়, তাদের প্রতি একাত্মতাও জানাচ্ছি।’মালালার ঘোষিত বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা আগামী অক্টোবরে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের লেডি মার্গারেট হলে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করবে।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে তালেবানের হাতে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর পাকিস্তানের নাগরিক মালালা ইউসুফজাই ব্রিটেনের ওয়েস্ট মিডল্যান্ডসে রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছেন। মালালা ইউসুফজাই পাকিস্তানের তালেবান নিয়ন্ত্রিত একটি অঞ্চলে নারী শিক্ষার পক্ষে তার সাহসী ভূমিকার কারণে প্রথম আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের নজরে আসেন।
তালেবান ২০১২ সালে মালালাকে স্কুল থেকে ফেরার পথে মাথায় গুলি করে হত্যার চেষ্টা চালায়। ওই ঘটনা তাকে বিশ্বজোড়া পরিচিতি এনে দেয়। সেসময় তার বয়স ছিল ১৫ বছর। ওই হামলা থেকে সেরে ওঠার পর মালালা নারী শিক্ষার পক্ষে তার প্রচারণা অব্যাহত রাখেন। তিনি এই বিষয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এক বিশেষ অধিবেশনে বক্তৃতাও দেন।
২০১৪ সালে ১৭ বছর বয়সে মালালা সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে নোবেল শান্তি পুরষ্কার লাভ করেন। তার সাথে যৌথভাবে নোবেল জেতেন ভারতের কৈলাস সত্যার্থি। মালালা ইউসুফজাই ২০১৩ সালেও এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুরস্কার পাননি।
২০১৩ সালে মার্কিন সাময়িকী টাইম মালালাকে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি বলে বর্ণনা করে। ওই বছরই মালালা ইউরোপীয় ইউনিয়নের শাখারভ মানবাধিকার পুরস্কার পান। মালালা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন এবং মানবাধিকার নিয়ে বিশ্বজুড়ে সরব রয়েছেন।