চুরি, নিরাপত্তাহীনতা ও দুর্ঘটনার গল্প সদ্য উদ্বোধনকৃত মওলানা ভাসানী সেতু

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২৭ আগu ২০২৫ ১২:৪৬ অপরাহ্ণ   |   ৩১ বার পঠিত
চুরি, নিরাপত্তাহীনতা ও দুর্ঘটনার গল্প সদ্য উদ্বোধনকৃত মওলানা ভাসানী সেতু

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-

 

গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্বপ্নের ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ উদ্বোধনের মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে চলে আসলো উদ্বেগ ও নিরাপত্তাহীনতার গল্প। ২০ আগস্ট উদ্বোধন হওয়ার পর ৫ দিনের মধ্যে সেতুর বিদ্যুৎ সংযোগ সচল হয়নি। উদ্বোধনের পরপরই ২১ আগস্ট চুরি হয়েছে সেতুর ৬টি ল্যাম্পপোস্টের দু-পাশের ৩১০ মিটার দীর্ঘ বিদ্যুতের ক্যাবেল। এরপর ২৪ আগস্টে চুরি হয়েছে সেতুর ২ শতাধিক রিফ্লেক্টর লাইট। ফলে সন্ধ্যার পর পুরো সেতু ও সংযোগ সড়ক অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে।
 

সেতুর অন্ধকারে ইতিমধ্যেই ঘটেছে দুটি সড়ক দুর্ঘটনা, যেখানে একজন নিহত হয়েছেন এবং আরও দুইজন আহত হয়েছেন। পাশাপাশি চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সেতুর উদ্বোধনের পর থেকে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ ও যানবাহন চলাচল করছে, কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় সন্ধ্যার পর নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে পড়ে যায় সাধারণ মানুষ।
 

সেতুর দুই প্রান্তের বাসিন্দারা প্রশাসনের উদাসীনতার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। গাইবান্ধার হরিপুরের বাসিন্দা ওবায়েদুল ইসলাম বলেন, “সেতু উদ্বোধনের আগে আমরা আশা করেছিলেন স্বাচ্ছন্দ্য ও নিরাপত্তার। কিন্তু পরপর চুরি ও দুর্ঘটনার ঘটনায় আশাহত হয়ে পড়েছি। সেতুর দুই প্রান্তে পুলিশ বক্স স্থাপন এবং চলাচল নিয়ন্ত্রণের দিকে প্রশাসনের নজর দেওয়া জরুরি।”
 

কুড়িগ্রামের চিলমারীর বাসিন্দা মানিক মিয়া জানান, চোরকে শনাক্ত করতে না পারায় এবং লাইটিং ব্যবস্থা সচল না থাকায় মানুষ সন্ধ্যার পর নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিয়ে চলাচল করছে। তিনি দ্রুত স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প ও কার্যকর লাইটিং ব্যবস্থা দাবি করেন।
 

গাইবান্ধা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী জানিয়েছেন, বিদ্যুতের ক্যাবেল চুরির ঘটনা এবং রিফ্লেক্টর লাইট চুরি নিয়ে উদ্বিগ্ন হলেও দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ চালুর চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, “সেতুতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় অপ্রত্যাশিত চুরির ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনা হবে।”
 

৫ বছরের নির্মাণ পর ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ এবং ৯২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হওয়া এই সেতুটি গাইবান্ধা-কুড়িগ্রামের সরাসরি যোগাযোগের পথ হিসেবে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করলেও, উদ্বোধনের কয়েক দিনের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা এবং অপরাধ বৃদ্ধি স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।