ছোট মাছ কি আসলেই চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়

প্রকাশকালঃ ১৬ জুলাই ২০২৪ ০৩:৪৯ অপরাহ্ণ ৩৯৩ বার পঠিত
ছোট মাছ কি আসলেই চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়

সুস্থ থাকার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া জরুরি। একেক ধরনের খাবার একেক রকমের পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ, যা আমাদের সুস্থ রাখতে ভূমিকা রাখে। এ ক্ষেত্রে প্রচলিত একটি কথা হলো- ছোট মাছ খেলে চোখ ভালো থাকে। যদিও বর্তমান প্রজন্মে অনেকেই মাছ খেতে চান না। দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে ছোট মাছের ভূমিকা আছে কিনা এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে বিস্তারিত কথা বলেছেন পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ ও ডায়াটেটিকস বিভাগের প্রধান নিশাত শারমিন নিশি। ছোট মাছের পুষ্টিগুণ নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করেছেন তিনি।    

 

ছোট মাছ চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়

ছোট মাছ চোখের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ছোট মাছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ পাওয়া যায়। আর ভিটামিন ‘এ’ দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। মলা, ঢেলা, চান্দা, পুঁটি, টেংরা, কাচকি, বাতাসি মাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’, ক্যালসিয়াম, জিংক, আয়রন, ফসফরাস, প্রোটিন ও ভিটামিন ‘ডি’ রয়েছে। যা চোখ ভালো রাখতে সাহায্য করে বলে জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ নিশাত শারমিন নিশি।

 

বিশেষ করে যদি চোখের কথা বলা হয়, সে ক্ষেত্রে ছোট মাছে ভিটামিন ‘এ’ এর পরিমাণ বেশি থাকায় এটি চোখের জন্য ভীষণ উপকারী। ছোট মাছে মজুদ থাকা প্রোটিন চোখের নতুন কোষ তৈরিতে সাহায্য করে। মলা ও চান্দা মাছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ পাওয়া যায়। প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্য উপযোগী মলা মাছে ২৫০০ মাইক্রোগ্রাম ও চান্দা মাছে ১৫০০ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন ‘এ’ পাওয়া যায়।

 

পুষ্টিবিদ নিশাত শারমিন বলেন, ছোট মাছ সম্পূর্ণ চিবিয়ে খাওয়া সম্ভব, কোনোকিছুই বাদ যায় না। ফলে পুষ্টির সবটুকু উপাদান আমরা সেখান থেকে পাই, বড় মাছের মতো পুষ্টির অপচয় হয় না। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, শিশুরা বিশেষ করে গ্রাম-গঞ্জের শিশুরা চোখের নানা সমস্যায় ভুগে। এ ধরনের সমস্যাগুলো আমাদের দেশে সম্পূর্ণ কমে যায়নি। সেক্ষেত্রে খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন সম্ভব না হলেও যদি সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন ছোট মাছ রাখা যায়, তাহলে এ ধরনের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। আর শুধু চোখ নয়, শরীরের জন্যও ছোট মাছের উপকারিতা রয়েছে।


ছোট মাছের পুষ্টিগুণ

  • ডোকোসাহেক্সায়েনোইক অ্যাসিড (ডিএইচএ) এবং ইকোসাপেন্টাইনয়িক অ্যাসিড (ইপিএ) থাকে ছোট মাছে, যা বড়দের হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে। এটি মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ধরে রাখা ও শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়ক। ছোট মাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম থাকায় শরীরের জন্য বেশ উপকারী। পাশাপাশি শরীরের হাড় মজবুত রাখে ও চোখের সমস্যা দূর করে।

  • দেশে নারীদের অনেকের শরীরে আয়রনের ঘাটতি থাকে। রক্তস্বল্পতা দূর করতে টেংরা মাছ বেশ উপকারী। প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্য উপযোগী টেংরা মাছে প্রায় ৩২ মিলিগ্রাম আয়রন, ১৮.৮ গ্রাম প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম, ফসফরাস পাওয়া যায়।

  • মাছ হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে, কোলেস্টেরল স্বাভাবিক রাখে। মাছ থেকে প্রচুর প্রোটিন পাওয়া যায়, কোষ মেরামত, পেশি তৈরি করতে ও ভালো রাখতেও সাহায্য করে মাছ।

  • রক্তশূন্যতার সমস্যা দূর করতে টেংরা মাছ উপকারী। এ ছাড়াও কাশির সমস্যা থাকে অনেকের, কফ কমানোর জন্য টেংরা মাছ সাহায্য করে।

  • মাগুর মাছ শরীরে আয়রনের অভাব দূর করে। প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্য উপযোগী মাগুর মাছে প্রায় ০.৭ মিলিগ্রাম আয়রন, ৩০০ মিলিগ্রাম ফসফরাস ও ১৭২ মিলিগ্রামের মতো ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।

  • প্রোটিন সমৃদ্ধ শিং মাছ সহজে হজম হয়, ২১ মিলিগ্রামের মতো প্রোটিন, আয়রন ২.৩ মিলিগ্রাম ও ফসফরাস ৬৭০ মিলিগ্রাম থাকে খাদ্য উপযোগী প্রতি ১০০ গ্রাম শিং মাছে। স্তনদানকারী মায়ের জন্যও উপকারী শিং মাছ, এটি শরীরে শক্তি যোগায়।