ঢাকা প্রেস নিউজ
আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, তিস্তা ও ধরলাসহ প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বাড়ছে। কয়েকদিনের অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে এসব নদ-নদী অববাহিকার নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন তীরবর্তী বাসিন্দারা। তবে পানি বাড়লেও সহসাই বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বরাতে পাউবো জানায়, দেশে ও উজানে অতি ভারী বৃষ্টির কারণে আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি। সে অনুযায়ী আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ধরলা নদী কুড়িগ্রাম সেতু পয়েন্টে এবং দুধকুমার নদ পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে।
পাউবোর নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দেয়া তথ্যমতে, রোববার সকাল ৯টা থেকে গতকাল সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৭২ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি নুন খাওয়া পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৯১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং একই সময়ে চিলমারী পয়েন্টে ২১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বাড়ছে দুধকুমার, তিস্তা ও ধরলার পানিও। তিস্তার পানি একই সময়ে কাউনিয়া পয়েন্টে ৪৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বৃষ্টিপাত ও ঢলের কারণে আগামী কয়েকদিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। তবে ব্রহ্মপুত্রসহ জেলার কোনো নদ-নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করার পূর্বাভাস নেই বলেও জানিয়েছে পাউবো।
এদিকে পানি বাড়তে থাকায় জেলার উলিপুর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার কয়েকটি চরের নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করার খবর পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় এসব নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা দিনমজুর হামিদুল হক বলেন, ‘পানি বাড়তাছে। অহনও বাড়িঘরে ঢুকে নাই। কিন্তু দুই-একটা নিচা চরে পানি উঠছে। ভাঙনও আছে।’
বেগমগঞ্জ ইউপি সদস্য সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ইউনিয়নের চর বালাডোবা ও মুসার চর থেকে বিগত বন্যার পানি ভালোভাবে নেমে যাওয়ার আগেই আবার পানি বাড়ছে। এতে এসব চরে আবারও পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার সকালে যেভাবে পানি বাড়তে দেখা গেছে এমনটা চলতে থাকলে এসব চর আবার প্লাবিত হতে পারে। ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ব্যাপারীপাড়ার নতুন চর এবং ৬ নম্বর ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকটি চরের গ্রামীণ সড়ক পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। তবে এখনও বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করে নাই’ পরিস্থিতি বর্ণনায় যোগ করেন এই ইউপি সদস্য।
পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘নদ-নদীর পানি বাড়ছে। তবে বিপদসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা নেই। বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পূর্বাভাসও নেই। কয়েকদিন বৃদ্ধি পাওয়ার পর আবার পানি নেমে যাবে।’