হৃৎপিণ্ড হলো আমাদের শরীরের পাম্প। এই পাম্পটি নিরন্তর অক্সিজেন ও পুষ্টিসমৃদ্ধ রক্ত পুরো দেহে পৌঁছে দেয়। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত এই কাজটি বিরামহীনভাবে চলতে থাকে। তাহলে বুঝতেই পারছেন এই অঙ্গের সুস্থ থাকাটা ঠিক কতটা জরুরি।
শেষ কয়েক দশকে বৃদ্ধি পেয়েছে হৃৎপিণ্ডের অসুখে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এমনকি ৩০-এর গোড়াতেও অনেকে হৃৎপিণ্ডের রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন। তাই এই অঙ্গের দিকে খেয়াল রাখাটা খুবই প্রয়োজনীয়।
সমস্যা হলো, হৃৎপিণ্ড নিয়ে বিভিন্ন সময়ে একের পর এক তথ্য সামনে আসে।
এই সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে কোন তথ্য খাঁটি, আর কোনটা ভুয়া, তা বোঝা বড় কঠিন কাজ। তাই বিশেষজ্ঞের মতামত জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এই যেমন- বেশ কিছুদিন ধরে শোনা যাচ্ছে, বাঁ পাশ হয়ে ঘুমালে নাকি হৃৎপিণ্ডের ক্ষতি হয়? এই তথ্য কতটা সত্য? এই প্রসঙ্গেই মুখ খুললেন ভারতের বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. রুদ্রজিৎ পাল।
এই বিষয়টি নিয়ে খুব একটা গবেষণা হয়নি।
তবে কয়েকটি গবেষণা ইঙ্গিত দিয়েছে যে হৃৎপিণ্ডের অসুখে আক্রান্ত রোগীর বাঁ পাশ ফিরে শুলে সমস্যা হলেও হতে পারে। এ ক্ষেত্রে বাঁ পাশে শোয়ার সময় হৃৎপিণ্ডের পেশির কাজকর্মে সামান্য ব্যাঘাত ঘটতে পারে। তাই কিছু সমস্যা দেখা দিলেও দিতে পারে। তবে যাদের হৃৎপিণ্ডে কোনো সমস্যা নেই, তাদের বাঁ পাশ ফিরে শুলে কোনো সমস্যাই হয় না। তাই সুস্থ-স্বাভাবিক ব্যক্তিরা নিশ্চিন্তে বাঁ পাশে শুতে পারেন।
এতে কোনো সমস্যার আশঙ্কা নেই বলেই জানালেন ডা. পাল।
আর ডান পাশে শুলে কোনো সমস্যা হয় না। এমন তথ্য কোনো গবেষণায় উঠে আসেনি।
তবে হৃৎপিণ্ডের রোগ বাড়ার পেছনে রয়েছে এই কারণগুলো-
১. বাইরের তেল, মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া
২. ধূপমান ও মদপান
৩. অত্যধিক দুশ্চিন্তা
৪. ডায়াবেটিস, হাইপ্রেশার ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে না থাকা
৫. ওজন বেশি থাকা
৬. শরীরচর্চার অভ্যাস না থাকা ইত্যাদি।
হৃৎপিণ্ডকে তরতাজা রাখতে এই কয়েকটি টিপস মেনে চলুন-
১. শাক-সবজি ও ফল বেশি পরিমাণে খান
২. নুন, তেল খাওয়া ছাড়ুন
৩. দুশ্চিন্তা কমান
৪. দিনে ৩০ মিনিট শরীরচর্চা অত্যাবশ্যক
৫. আর অবশ্যই বয়স ৩০ পার হওয়ার পর বছরে একবার ইকো ও ইসিজির মতো হৃৎপিণ্ডের পরীক্ষা করুন।