আরবি নিয়ত শব্দের অর্থ মনে মনে কোনো কাজের সুদৃঢ় ইচ্ছা করা। রোজা শুদ্ধ হওয়ার জন্য নিয়ত করা আবশ্যক। কেউ যদি সূর্যাস্তের পরবর্তী কোনো এক সময়ে মনে মনে এই ইচ্ছা করে যে আমি আগামীকাল রমজানের রোজা রাখব, তা হলে সে রোজা রাখার নিয়ত করল বলে গণ্য হবে। নিয়ত শুদ্ধ হওয়ার জন্য মুখে উচ্চারণ করা আবশ্যক নয়, তবে তা উত্তম।
(ফাতাওয়া আলমগিরি : ১/১৯৫)
রমজানের রোজার নিয়ত সূর্যাস্ত তথা রাত থেকে দুপুরের ঘণ্টাখানেক আগ পর্যন্ত যেকোনো সময় করে নিলে তা শুদ্ধ হয়ে যাবে। তবে নিয়ত সুবহে সাদিকের আগেই রাতে করে নেওয়া উত্তম। সুবহে সাদিক থেকে দুপুরের এক ঘণ্টা আগ পর্যন্ত নিয়ত শুদ্ধ হওয়ার শর্ত হলো সুবহে সাদিকের পর সর্বপ্রকার পানাহার ইত্যাদি থেকে বিরত থাকা। অবশ্য রোজা রাখার জন্য সাহরি খেলেও রোজার নিয়ত হয়ে যায়।
(বাদায়িউস সানায়ে : ২/২২৯; আল বাহরুর রায়িক : ২/২৫৯)
কোনো সুস্থ ও মুকিম ব্যক্তি যদি রমজান মাসে নফল রোজার নিয়ত করে অথবা অন্য কোনো ওয়াজিব রোজার নিয়ত করে, তবে তার রমজানের রোজাই আদায় হবে। কেননা রমজান ফরজ রোজার জন্য শরিয়ত কর্তৃক নির্ধারিত। আর যদি অসুস্থ ও মুসাফির ব্যক্তি রমজান মাসে কোনো ওয়াজিব বা কাজা রোজার নিয়ত না করে কেবল নফল রোজার নিয়ত করে, তবে রমজানের রোজাই আদায় হবে। অসুস্থ ও মুসাফির ব্যক্তি যদি রমজান মাসে কোনো ওয়াজিব রোজার নিয়ত করে তবে অন্য রোজাই আদায় হবে।
তবে এমনটি করা অনুচিত। (ফাতাওয়া আলমগিরি : ১/২১২)
রোজার নিয়ত করা ফরজ। নিয়ত অর্থ সংকল্প। যেমন—মনে মনে এ সংকল্প করবে, আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে আগামীকালের রোজা রাখছি। মুখে বলা জরুরি নয়।
তবে মুসলিম সমাজে রোজার নিয়ত বলে একটি দোয়া প্রচলিত আছে। দোয়াটি হলো—
উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন আসুমা গদাম মিন শাহরি রমাদানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা, ইয়া আল্লাহু ফাতাকব্বাল মিন্নি ইন্নাকা আনতাস সামিউল আলিম।
অর্থ : হে আল্লাহ, আপনার সন্তুষ্টির জন্য আগামীকালের রমজান শরিফের ফরজ রোজা রাখার নিয়ত করছি। আমার তরফ থেকে আপনি তা কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাত।