সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি ইউসুফ আব্দুল্লাহ সুমনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে শুনানি শেষে আদেশের দিন ধার্য করেন।
আদালতে সুলতানা পারভীনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও অ্যাডভোকেট ফয়জুল্লাহ ফয়েজ। অন্যদিকে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবি।
এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালত সুলতানা পারভীনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরও আগে তিনি গত ৩ আগস্ট হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেছিলেন, তবে আদালত তাকে চার সপ্তাহের মধ্যে কুড়িগ্রাম জেলা জজ আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। সে অনুসারে তিনি গত ২১ আগস্ট জামিনের আবেদন করলেও আদালতে সশরীরে উপস্থিত হননি। বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক আরিফের আইনজীবী আপত্তি জানান। সবশেষে ২ সেপ্টেম্বর আদালত তার জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।
২০২০ সালের ১৩ মার্চ গভীর রাতে কুড়িগ্রাম শহরের সরকারি একটি পুকুর ডিসির নামে নামকরণ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে বাসা থেকে তুলে নেয় জেলা প্রশাসনের তিন ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তাকে ধরলা নদীর তীরে নিয়ে গিয়ে ক্রসফায়ারে হত্যার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে বিবস্ত্র করে মারধর করা হয় এবং মাদক রাখার অভিযোগ দেখিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে এক বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা দেওয়া হয়।
সারা দেশে ব্যাপক সমালোচনা ও প্রতিবাদের মুখে পরদিনই তাকে জামিনে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় প্রশাসন। পরে সাংবাদিক আরিফ কুড়িগ্রাম সদর থানায় তৎকালীন ডিসি সুলতানা পারভীনসহ তিন ম্যাজিস্ট্রেট এবং অজ্ঞাত আরও ৩০-৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। হাইকোর্টের নির্দেশে ২০২০ সালের ৩১ মার্চ মামলাটি রেকর্ড করে পুলিশ।
পাঁচ বছর তদন্ত শেষে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। এতে সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীন, তৎকালীন আরডিসি নাজিম উদ্দিন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এস এম রাহাতুল ইসলামকে অভিযুক্ত করা হয়। চার্জশিট দাখিলের পর সুলতানা পারভীন আদালতে আত্মসমর্পণ করলেও অপর আসামিরা এখনও আত্মসমর্পণ করেননি।