পরীক্ষার হলে ম্যাসেঞ্জারে নকল সরবরাহ, বহিষ্কার পাঁচ পরীক্ষার্থী

প্রকাশকালঃ ২৮ মে ২০২৩ ১১:১১ পূর্বাহ্ণ ১৫৮ বার পঠিত
পরীক্ষার হলে ম্যাসেঞ্জারে নকল সরবরাহ, বহিষ্কার পাঁচ পরীক্ষার্থী

চাঁদপুরের মতলবে এসএসসি পরীক্ষার শেষ সময়ে এসে পাঁচ ডিজিটাল নকলবাজ ধরা পড়েছে। এর আগে মুঠেফোনের ম্যাসেঞ্জারে নকল সরবরাহের মাধ্যমে পুরো পরীক্ষা পার করেছে তারা। তবে এবার শেষ রক্ষা আর হয়নি তাদের। ধরা পড়তে হলো কেন্দ্রে আসা ম্যাজিস্ট্রেটের হাতে।

এসময় বহিষ্কার হয়েছে এই পাঁচ পরীক্ষার্থী। এসএসসি পরীক্ষায় চাঞ্চল্যকর এমন নকলের ঘটনা ঘটেছে চাঁদপুরের মতলবগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। মূল কেন্দ্র মতলবগঞ্জ জেবি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় হলেও একটি পরীক্ষার ভ্যনু ছিল।

আলোচিত এ ঘটনা ঘটেছে শনিবার (২৭ মে) দুপুর ১২টার দিকে অর্থাৎ পরীক্ষা শুরু হওয়ার দুই ঘণ্টার মাথায়।


বহিষ্কার হওয়া পাঁচ পরীক্ষার্থী হলো- ওমর ফারুক, মশিউর রহমান, ইব্রাহিম খলিল, ফারদিন ইসলাম ও মাহবী হাসান মুহিন। 

এদের মধ্যে মশিউর রহমান বোয়ালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের, আর বাকি চারজন মতলবগঞ্জ জেবি পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

জানা গেছে, পরীক্ষার শুরু থেকে এই পাঁচজন পরীক্ষার্থী ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুরো পরীক্ষা নকল করে দিয়ে আসছিল। তাদের পাঁচজনের কাছে স্মার্টফোন থাকতো।


আর এই পাঁচজনের মধ্যে একটা গ্রুপ ম্যাসেঞ্জার ছিল। বাইরে থেকে তাদেরকে ওই মুঠোফোনের ম্যাসেঞ্জারে নকল সরবরাহ করা হতো। চারজনের একটা গ্রুপ বাইরে থেকে তাদেরকে নকল সরবরাহ করতো।
 
তাদেরকেও আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান কেন্দ্রে কর্তব্যরত ম্যাজিস্ট্রেট, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম আক্তার। 


তিনি আরো জানান, হলে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রশ্ন দেওয়ার পর পরই এই প্রশ্নের ছবি তুলে তারা বাইরে পাঠিয়ে দিতো।

পরে তাদেরকে মুঠোফোনের ম্যাসেঞ্জারে একটা একটা করে উত্তর সরবরাহ করতো। এভাবেই তারা পুরো পরীক্ষা পার করেছে। 

এরই মধ্যে শনিবার ছিল পদার্থ বিজ্ঞান বিষয় পরীক্ষা। পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম আক্তার গোপন সূত্রে এমন একটি চাঞ্চল্যকর নকলের খবর পান। 


শনিবার দুপুর ১২টার দিকে পরীক্ষার হলে গিয়ে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ১নং কক্ষে গিয়ে পরীক্ষার্থী মাহবী হাসান মুহিনকে চ্যালেঞ্জ করেন তিনি। আর তখনই তার কাছ থেকে একটি স্মার্টফোন উদ্ধার করা হয় এবং পুরো নকলের বিষয়টি বের হয়ে আসে। যখন তল্লাশি শুরু করলেন তখন এই পাঁচজনের একজন তার সঙ্গে থাকা মুঠোফোনটি ময়লার ঝুঁড়িতে ফেলে দেয়। পরে সেটি ট্যাগ অফিসার উদ্ধার করেন। তবে বাকি তিনজনকে তল্লাশি করে মুঠোফোন পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, তল্লাশির সময় তারা কৌশলে জানালা দিয়ে তা ফেলে দিয়েছে। এ ঘটনার পরপরই তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়।  

পরীক্ষা কেন্দ্রে শুধুমাত্র কেন্দ্র সচিব মুঠোফোন ব্যবহার করতে পারবেন। তাও সেটা স্মার্টফোন নয়। সে জায়গায় পাঁচজন পরীক্ষার্থী হলে কীভাবে মুঠোফোন নিয়ে ঢুকলো এমন প্রশ্ন সংশ্লিষ্ট সবার। ধারণা করা হচ্ছে তাদেরকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর বাইরে থেকে কোনোভাবে মুঠোফোন সরবরাহ করা হতো।

এদিকে, বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।