বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে হওয়া ‘গোলামির নতুন সংস্করণ‘ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন: ফখরুল

প্রকাশকালঃ ০১ জুলাই ২০২৪ ১১:৫২ পূর্বাহ্ণ ৮৪২ বার পঠিত
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে হওয়া ‘গোলামির নতুন সংস্করণ‘ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন: ফখরুল

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে হওয়া সাম্প্রতিক কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতাকে ‘গোলামির নতুন সংস্করণ‘ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের চুক্তিগুলো আওয়ামী লীগের ধারাবাহিক গোলামির নব সংস্করণ। কানেকটিভিটি ও রেল যোগাযোগের নামে যে করিডোর দেয়া হচ্ছে, তাতে সার্বভৌমত্ব মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।

 

ফখরুল বলেন, ভারতের সাথে সমঝোতার আড়ালে যে চুক্তি করলো, তা বাংলাদেশকে আজীবনের জন্য ভারতের গোলামে পরিণত করলো। যা নিরাপত্তার জন্য হুমকি। ভূরাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশকে ভারতের নিরাপত্তা সুরক্ষাক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, ভারতকে সুবিধা দেয়া হয়েছে, যা জনগণ মেনে নিবে না। বাংলাদেশকে ভারতের বাজারে পরিণত করা হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের স্বার্থের চাইতে এইসব চুক্তির মাধ্যমে ভারতের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ জনগণের কাছে স্পষ্ট। তিনি বলেন, ভারতে থেকে তিস্তার পানি আনায় ব্যর্থতা এবং জনগণের সঙ্গে তামাশা জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক।

 

ফখরুল মনে করেন, ভারতকে করিডোর দেয়ার জন্য রেল চুক্তিতে দেশের মানুষের লাভ হবে না। রেল করিডোর দেয়া আত্মঘাতী। আর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের বিষয়টি ইউরোপের সঙ্গেও তুলনীয় নয়। তিনি বলেন, ভারতকে রেল করিডোর দেয়া আরও বিপজ্জনক আত্মসমর্পণ। রেল ট্রানজিট দিতে হলে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে। এই রেল করিডোর বাংলাদেশের জন্য কোনো উপকারে আসবে না। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের যে ১০ চুক্তি ও সমঝোতা হয়েছে, বরাবরের মত এবারও সেসবের বিস্তারিত প্রকাশ হয়নি বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল।

 

বলেন, ভারতীয় ঋণ সহায়তা পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী হওয়া যায় না। আর দেশের মানুষকে অন্য দেশে চিকিৎসা করার বিষয়ে উৎসাহ প্রদান চিকিৎসাব্যবস্থা ধ্বংস করা ছাড়া আর কিছু নয়। বিএনপির মহাসচিব বলেন, ভারত কেবল অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেই নয়; রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, রাডার স্থাপনসহ বিভিন্ন প্রকল্পে সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে। যা দেশের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলবে। আর সরকারের ভারত তোষণ নীতি স্পষ্ট। নতজানু পররাষ্ট্রনীতির বহি:প্রকাশ।

 

সংবাদ সম্মেলনে দুই দেশের মধ্যে পানি বণ্টন নিয়েও কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব। বলেন, ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন সমস্যা সমাধানে কোনও আলোচনা হয়নি। মির্জা ফখরুল বলেন, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন সমস্যা সমাধানে ভারতের প্রতি বাংলাদেশের একক নির্ভরতার কারণে নদীগুলোকে শুকিয়ে ফেলেছে। ভারতের সঙ্গে পানি সমস্যা সমাধানে জিয়াউর রহমানের নীতি অনুসরণ করাই শ্রেয়।

 

সীমান্তে হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে কোনও পদক্ষেপ নেয়া হয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর এক পাক্ষিক। বাংলাদেশের নূন্যতম স্বার্থরক্ষা হয়নি। এইসব  চুক্তি দেশের কল্যাণে নয় বরং আওয়ামী লীগের অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার নজরানা। ভারতের সঙ্গে হওয়া চুক্তি ও সমঝোতা বাতিল এবং এসব জনসম্মুখে আনার দাবি বিএনপির মহাসচিব। বলেন, সরকার অবৈধ ক্ষমতা অটুট রাখার হীন স্বার্থে জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।