ঢাকা প্রেস নিউজ
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাসে ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি ঘটে যাওয়া ছাত্র নির্যাতনের ঘটনায় সাবেক উপাচার্য ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার, বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়েছে। গত রোববার বুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী এবং ভুক্তভোগী আল আরাফাত হোসেন এ মামলা দায়ের করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে যে, ঘটনার সময় বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, হাসান সরোয়ার সৈকত, মিনহাজুল ইসলাম, নীলাদ্রি নিলয়, আকাশ দেবনাথ, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, রাউফুন রাজন ঝলক, রাফাত ইমতিয়াজ চৌধুরী, মেহেদী হাসান রবিন, ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না, জিয়া উদ্দিন রুবেল, অর্নব চক্রবর্তী সৌমিক, মেহেদী হাসান, সত্য প্রসাদ মজুমদারসহ মোট ১০-১৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
২০১৮ সালের ২৪ জানুয়ারি বুয়েট ক্যাম্পাসের জিমনেসিয়ামের পেছনে ছাত্রশিবিরের রাজনীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে মেহেদী হাসান রাসেলসহ ২০-২৫ জন সহপাঠী আল আরাফাত হোসেনকে অমানবিকভাবে মারধর করেন। মারধরের সময় আল আরাফাত অজ্ঞান হয়ে পড়েন এবং পরবর্তীতে জ্ঞান ফিরে মারধর অব্যাহত থাকে। নির্যাতনকারীরা আল আরাফাতকে বলেন, "আর সময় পাবি না, কালিমা পড়ে নে।" পরে তিনি নিজেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শোয়া অবস্থায় দেখতে পান।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, রাজশাহী নিউ ডিগ্রি কলেজে উচ্চমাধ্যমিক পড়া সহপাঠী হাসান সরোয়ার সৈকত আল আরাফাত হোসেনকে স্ট্যাম্প দিয়ে পেটানোর সময় বলছিলেন, "তুই শিবির করতি, তুই শিবিরের মেসে থাকতি।"
মারধরের আগে ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার উপস্থিত হয়ে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে মেহেদী হাসান রাসেল তাকে বলেন, "স্যার, এগুলো ছোট সমস্যা, আমরা মিটিয়ে নেব।" অপর শিক্ষক হুমায়ুন কবীর ছাত্রকল্যাণ পরিচালককে অনুরোধ করেন যেন আল আরাফাত হোসেনকে তার সঙ্গে নিয়ে যান, তবে তিনি তা উপেক্ষা করেন এবং দ্রুত চলে যান। এরপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আল আরাফাতকে জিজ্ঞাসাবাদ ও নির্যাতন শুরু করেন।
এ সময় আল আরাফাত হোসেনের জুনিয়র আলি আম্মার মুয়াজ এবং মুহাম্মাদ শামসুজ্জামান ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেন।
শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. স্বপন মিয়া মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন। শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মুনসুর জানান, মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে এবং এর সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।