জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় দাম সমন্বয়ের ‘ফর্মুলা’ চূড়ান্ত

প্রকাশকালঃ ১৯ অক্টোবর ২০২৩ ০১:৩৯ অপরাহ্ণ ১৮০ বার পঠিত
জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় দাম সমন্বয়ের ‘ফর্মুলা’ চূড়ান্ত

ন্তর্জাতিক বাজারদরের সঙ্গে জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় দাম সমন্বয়ের একটি ‘ফর্মুলা’ চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তবে নির্বাচনের আগে তা বাস্তবায়নের সম্ভাবনা নেই বলেও তিনি জানান। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জ্বালানি তেল কম্পানিগুলোর ইনডেক্সিংয়ের ফর্মুলা ধরে আমরা একটা ফর্মুলা দাঁড় করিয়েছি। প্রাইসিং ফর্মুলাটা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি।

সেখান থেকে সিদ্ধান্ত দিলে পরে বলা যাবে। এটা এখনই বলা যাচ্ছে না। সামনে নির্বাচনের পরে হয়তো কিছু করা হবে।’ গতকাল মঙ্গলবার বিদ্যুৎ ভবনে ‘স্মার্ট গ্রিড এক্সপেরিয়েন্স ডে’ শীর্ষক কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সংঘাত শুরুর পর জ্বালানি নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেওয়ার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘তেল-গ্যাসের একটা বড় অংশ আসে মধ্যপ্রাচ্য থেকে। যুদ্ধের কারণে জ্বালানি পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে―এমন কথা এখনো আমরা বলতে পারি না। তবে এটা চিন্তার বিষয়। মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে, এটাতে বলা যাচ্ছে না যে পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে।


জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) গত সেপ্টেম্বর থেকে স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি (অটোমেটেড প্রাইসিং ফর্মুলা) কার্যকর করার শর্ত দিয়েছিল। এ শর্ত পূরণে ডিজেল, পেট্রল, অকটেনসহ জ্বালানি তেলের দাম বিশ্ববাজারের সঙ্গে মিল রেখে নিয়মিত সমন্বয় করার উদ্যোগও নিয়েছে সরকার। শুরুতে এটি তিন মাস পরপর নির্ধারণের পরিকল্পনা ছিল। এখন প্রতি মাসে দাম নির্ধারণের চিন্তা চলছে। 

স্বয়ংক্রিয়ভাবে মূল্য সমন্বয়ের ফমুর্লাটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে কবে থেকে ফর্মুলাটি কার্যকর করা হবে―সেটি এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। সুবিধাজনক সময়ে এই ফর্মুলা কার্যকর করা হবে। এ বিষয়ে আইএমএফের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে।’

গত ৮ অক্টোবর জ্বালানি বিভাগের সচিব নুরুল আলমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকা সফরত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) প্রতিনিধিদল। বৈঠকে জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় দাম নির্ধারণ পদ্ধতি, জ্বালানি খাতে ভর্তুকি, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) আমদানি নিয়ে আলোচনা হয়।


বৈঠকে জ্বালানি বিভাগের পক্ষ থেকে আইএমএফকে জানানো হয়, জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণের স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি কার্যকর করতে আরো তিন থেকে চার মাস সময় লাগবে। কারণ বাংলাদেশের অবকাঠামোতে চাইলেই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি কার্যকর করা সম্ভব নয়। এ জন্য সময় দিতে হবে। দেশের প্রেক্ষিতে কোন পদ্ধতি কার্যকর হবে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে, তাই সময় লাগছে।

বিপিসির কর্মকর্তারা বলছেন, তেলের দাম নির্ধারণের দুটি অংশ থাকবে। প্রিমিয়াম (জাহাজ ভাড়া ও অন্যান্য), ট্যাক্স, বিপণন মার্জিন, ডিলারদের কমিশন ইত্যাদি মিলে একটি নির্ধারিত অংশ থাকবে, যা সাধারণত পরিবর্তন হবে না। অপর অংশটি আন্তর্জাতিক মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করে বাড়বে বা কমবে। ফর্মুলা প্রণয়নে ভারতের জ্বালানি তেলের দরও বিবেচনায় রাখা হয়েছে।

বিপিসি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বছরে জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রায় ৭৫ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ডিজেলের চাহিদা ৫০ লাখ মেট্রিক টন। ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনের মূল্য নির্বাহী আদেশে নির্ধারণ করে সরকার। এ ছাড়া জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েলসহ কিছু পণ্যের দাম প্রতি মাসে সমন্বয় করে বিপিসি।