দোহার ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন ২০২৫’-এ ড. ইউনূসের আহ্বান সামাজিক চুক্তি পুনর্গঠনের
বিশ্ববরেণ্য নোবেল বিজয়ী এবং আর্থনা সম্মেলনের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার কাতারের দোহায় ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন ২০২৫’-এর উদ্বোধনী ভাষণে বলেছেন, “বাংলাদেশ এখন এমন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে, যেখানে একটি নতুন সামাজিক চুক্তির সূচনা সম্ভব। এ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্র ও জনগণ, বিশেষ করে তরুণ সমাজ, একসাথে গড়ে তুলতে পারে ন্যায্যতা, মর্যাদা ও সুযোগভিত্তিক একটি ভবিষ্যৎ।”
তিনি বলেন, “আমরা পৃথিবীর জন্য আশার এক বাতিঘর হয়ে উঠতে চাই। এজন্য বিশ্ব বন্ধু ও অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানাই—আসুন, আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক চুক্তি পুনর্লিখি এবং সামাজিক ব্যবসা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও মাইক্রোফাইন্যান্সের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগণের জন্য টেকসই উন্নয়নের পথ সুগম করি।”
ড. ইউনূস তার বক্তব্যে সমন্বিত সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, “বিশ্ব আজ বহুমুখী সংকটে—জলবায়ু পরিবর্তন, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, প্রযুক্তিগত রূপান্তর ও মানবিক সংকটের সম্মুখীন। এই প্রেক্ষাপটে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতার পুনরুজ্জীবন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, “ভবিষ্যৎ উত্তরাধিকার নয়, এটি আমাদেরই নির্মাণের বিষয়। আসুন, একটি এমন পৃথিবী গড়ি—যেখানে কেউ এতটা দরিদ্র নয় যে স্বপ্ন দেখার সাহস হারায় না, এবং কোনো স্বপ্ন এত বড় নয় যে তা অর্জন করা অসম্ভব।”
সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ছিল—“আমাদের উত্তরাধিকার গড়ে তোলা: স্থায়িত্ব, উদ্ভাবন ও ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান”। এটি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান ও আধুনিক উদ্ভাবনী চিন্তাধারার সমন্বয়ে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গঠনের উপায় অনুসন্ধান করা হয়।
অধ্যাপক ইউনূস কাতার ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন শেখ মোজা বিনতে নাসের ও ভাইস চেয়ারপারসন শেখ হিন্দ বিনতে হামাদ আল থানিকে সময়োপযোগী এ সম্মেলন আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান।