গাইবান্ধা প্রতিনিধি:-
সাঁওতালদের সমাধিস্থল জবর-দখল ও মৃতদেহ সমাধিস্থ করতে ভূমিদস্যুদের বাঁধা অপসারণের দাবি জানিয়ে গাইবান্ধায় বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাপাহার ইউনিয়নের জয়পুর সাঁওতাল পল্লীর স্কুল মাঠে আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদ, এএলআরডি এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর সাঁওতাল পল্লীতে সন্ত্রাসী হামলায় গুলিবিদ্ধ দ্বিজেন টুডু।
এ্যাড. ফারুক কবীরের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন- আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ আহবায়ক অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম বাবু, সদস্যসচিব প্রবীর চক্রবর্তী, সমাজকর্মী মনির হোসেন সুইট, সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম পরিষদ সভাপতি ফিলিমন বাস্কে, তারামনি সরেন, সুচিত্রা মুরমু তৃষ্ণা, শ্যামবালা হেমব্রম, রাফায়েল হাসদা, সাহেব মুরমু, সুফল হেমব্রম, আন্দ্রিয়াস মুরমু, থমাস হেমব্রম, কমল মুরমু, ব্রিটিশ সরেন, কৃষ্ণ মুরমু প্রমুখ।
প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে ভূমিদস্যুদের কবল থেকে রাজাবিরাটের নিরীহ সাঁওতালদের ভূমি ও জীবনের নিরাপত্তা দাবী করে বক্তারা বলেন, গোবিন্দগঞ্জের রাজাহার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ভূমিদস্যু রফিকুল ইসলাম তার দলবল নিয়ে রাজাবিরাট এলাকায় সাঁওতালদের একমাত্র সমাধিস্থল জবর-দখল করে দীর্ঘদিন থেকে শক্তনেটের বেড়া দিয়ে ঘিরে রেখেছেন এবং সাঁওতালদের সমাধিস্থ করতে বাঁধা প্রদান করছেন। যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
তারা বলেন, গত ৩ জানুয়ারি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাজাবিরাটে গাইবান্ধা আইন কলেজের ছাত্র ব্রিটিশ সরেনের বাড়ীতে স্থানীয় রাজাহার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে তার সঙ্গীয় ভূমিদস্যুরা ফিলোমিনা হাসদাকে (ব্রিটিশ সরেনের মা) গুরুতর আহত করে। ফিলোমিনা হাসদা বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ঐদিন রাতে চেয়ারম্যান ও তার দলবল ব্রিটিশ সরেনের বাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করে। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে জুলিয়াস সরেন বাদী হয়ে চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ২০/২৫ জনকে আসামীর করে মামলা করেন। রফিকুল চেয়ারম্যান ঢাকা থেকে গ্রেফতার হয়। বর্তমানে জামিনে মুক্ত হয়ে চেয়ারম্যান রফিকুল সাঁওতালদের কৃষি ও সেচে বাঁধা প্রদানসহ এলাকায় দুর্বিসহ অবস্থার সৃষ্টি করেছে। তারা বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যাকলাপ সংগঠিত করে সাঁওতালদের উপর দোষ চাপিয়ে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর পাঁয়তারা এবং ভূমি-বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করছে।
বক্তারা ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জে শ্যামল, মঙ্গল ও রমেশ হত্যাসহ অসংখ্য সাঁওতাল আহত করার মূল হোতা প্রক্তন সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ এবং উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দসহ অন্য আসামিদের গ্রেফতারের দাবী জানান।