ঢাকা প্রেস-নিউজ ডেস্ক:-
জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে ছাত্র ও সাধারণ জনগণের মধ্যে বিভাজন এবং দ্বিধা তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা এবং অভ্যুত্থান-পরবর্তী গঠিত লিয়াজোঁ কমিটির সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকা মাহফুজ এই মন্তব্য করেন বৃহস্পতিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে।
‘কৈফিয়ত কিংবা বাস্তবতা’ শিরোনামে দেওয়া পোস্টে মাহফুজ লিখেছেন, "ক্ষমতার ভরকেন্দ্র এখন অনেকগুলো। সরকার দায়িত্ব নিলেও কার্যত কাজ করছে অন্য শক্তিগুলো। এই পরিস্থিতিতে জোড়াতালি দিয়ে গণতান্ত্রিক রূপান্তর বা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত সম্ভব নয়।"
তিনি উল্লেখ করেন, এস্টাবলিশমেন্ট এখন দ্বিদলীয় ব্যবস্থায় ফেরার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, আর ছাত্রদের প্রান্তিক করে রাখছে। তার ভাষায়, “ছাত্রদের কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে পড়ায় তারা এখন সংগঠিত শক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন না, বরং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতই ট্রিটেড হচ্ছেন।”
মাহফুজ আলম জানান, বর্তমানে সরকারের দায়িত্বে থাকা প্রায় তিন ডজন নিয়োগপ্রাপ্তের মধ্যে ছাত্রদের সংখ্যা মাত্র দুইজন। ছাত্র প্রতিনিধিরা রাষ্ট্রপতি অপসারণের ঘটনার পর থেকেই কোণঠাসা। ছাত্র আন্দোলন সারাদেশে সংগঠিত করতে না পারায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্ল্যাটফর্মও ব্যর্থ হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও লেখেন, "সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্র আপস করে চলেছে, মিডিয়া ও ব্যবসায় লীগপন্থী প্রভাব অব্যাহত। বিচার বিভাগও দ্বিদলীয় বলয়ে আবদ্ধ। ফলে পুরনো রাজনৈতিক বন্দোবস্তই টিকে আছে।"
বাম-ডান রাজনৈতিক শক্তিগুলোর ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, "বামপন্থীরা শুরু থেকেই সরকারের প্রতি সন্দিহান ছিলেন এবং অভ্যুত্থানের পক্ষে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেননি। আর ডানপন্থীরা আবেগের বশে প্রতিক্রিয়াশীল আচরণ করেছেন।"
সবশেষে মাহফুজ আলম বলেন, “ছাত্র-জনতা নতুন সিভিল সোসাইটি গঠনেও ব্যর্থ। শহীদ ও আহতদের বিচার এবং রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির প্রশ্নেও সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ ব্যর্থ। এই পরিস্থিতিতে ছাত্রদের বাদ দিয়ে পুরনো দ্বিদলীয় ব্যবস্থায় ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে এস্টাবলিশমেন্ট। সমাধান একটাই—ছাত্রদের ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করে ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলা।”