শফিকুল আলম: ফ্যাসিবাদে সমর্থন দেওয়া সাংবাদিকদের চিহ্নিত করা হবে

প্রকাশকালঃ ২০ নভেম্বর ২০২৪ ০৩:২৪ অপরাহ্ণ ০ বার পঠিত
শফিকুল আলম: ফ্যাসিবাদে সমর্থন দেওয়া সাংবাদিকদের চিহ্নিত করা হবে

ঢাকা প্রেস নিউজ

 

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ২০২৩ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে অনেক সাংবাদিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তাদের প্রতি তিনি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। তবে একইসঙ্গে গত ১৬ বছরে যারা ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখেছেন, তাদের চিহ্নিত করার কথাও উল্লেখ করেছেন।
 

বুধবার (২০ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত ‘জুলাই গণহত্যায় গণমাধ্যমের ভূমিকা: জবাবদিহিতা ও সংস্কার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় শফিকুল আলম এসব কথা বলেন।
 

তিনি বলেন, "জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে কিছু গণমাধ্যম ছাত্র-জনতাকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়েছিল। দেশে ফ্যাসিবাদের উত্থানে এসব গণমাধ্যমের কিছু অংশ কাজ করেছে। কারা কীভাবে এ কাজ করেছে তা খতিয়ে দেখা হবে। ২০১৪ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে ফ্যাসিবাদকে সমর্থন দেওয়ার ক্ষেত্রেও অনেকের ভূমিকা ছিল। তাদের চিহ্নিত করতে হবে।"
 

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস কনফারেন্স এবং গণমাধ্যমে প্রচারিত ফ্যাসিবাদী বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে শফিকুল আলম বলেন, "নির্বাচনের আগে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী বলে প্রচারণা চালানো হয়েছিল। এসবের পেছনে কারা কাজ করেছে তা খুঁজে বের করা জরুরি।"
 

সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, "আমাদের এমন আচরণ করা উচিত নয় যা ফ্যাসিবাদকে লালন করে। আমরা যেন শিবির ট্যাগ দিয়ে সমালোচনা না করি কিংবা মুক্ত সাংবাদিকতার পথে বাধা সৃষ্টি না করি।"


আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, "ছাত্র-জনতার নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন তখনই সফল হবে, যখন দেশের গণমাধ্যমগুলো ফ্যাসিবাদ ও আওয়ামী দোসরদের প্রভাবমুক্ত হবে। ১৯৭১ সালে যারা স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিল, তারা যেমন রাজাকার; তেমনি ২০২৪ সালের গণহত্যার সময় যারা ছাত্র-জনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল, তারাও রাজাকার। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।"


সভা থেকে গণমাধ্যমের উন্নয়নে আটটি সুপারিশ তুলে ধরা হয়:
১. বিদ্যমান গণমাধ্যম নীতি ও আইন থেকে নিয়ন্ত্রণমূলক ধারাগুলো সংশোধন করে স্বাধীন গণমাধ্যম ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।
২. রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে গণমাধ্যম অনুমোদন বন্ধ এবং দোষীদের বিচার নিশ্চিত করা।
৩. গণমাধ্যম মালিকানা ও অর্থায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
৪. সরকারের মাধ্যমে গণমাধ্যম বন্ধ করার ভয়াবহ নীতি বাতিল করা।
৫. সাংবাদিকদের নিয়মিত বেতন ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গণমাধ্যম কমিশন গঠন।
৬. সাংবাদিকদের জন্য অভিন্ন ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন এবং শ্রম আইন অনুযায়ী লভ্যাংশ বণ্টন।
৭. সাগর-রুনি হত্যাসহ সব সাংবাদিক নির্যাতনের বিচার নিশ্চিত করা।
৮. স্বতন্ত্র মিডিয়া কমিশন গঠন করে সাংবাদিকদের সুরক্ষা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।