দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক সহযোগিতা, অর্থনীতি, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যু এবং আন্তঃসংযোগ বাড়ানোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। বৈঠক কয়েকটি পর্বে বিভক্ত হয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সকাল ১০টায় তৌহিদ হোসেন ও ইসহাক দারের মধ্যে একান্ত বৈঠক হয়। পরে প্রথমবারের মতো মন্ত্রীপর্যায়ে আনুষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসে ঢাকা ও ইসলামাবাদ।
সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে বাণিজ্য বৃদ্ধি, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, জঙ্গিবাদ দমন, দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতি এবং সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করার মতো বিষয়গুলো গুরুত্ব পায়।
প্রস্তুত করা ছয়টি খসড়ার মধ্যে এদিন সই হয় পাঁচটিতে—
কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি চুক্তি
সাংস্কৃতিক বিনিময় বিষয়ে সমঝোতা
দুদেশের ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমির মধ্যে সমঝোতা
বাণিজ্য ও বিনিয়োগে যৌথ গ্রুপ গঠন
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ ও পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমঝোতা
এ ছাড়া সংবাদ সংস্থা, মান নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ও কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সইয়ের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
ঢাকা বৈঠকে বিশেষভাবে তুলে ধরে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাদের গণহত্যার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা, যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ, বাংলাদেশে আটকে থাকা পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন, সম্পদের পাওনা এবং ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে বৈদেশিক সহায়তার বকেয়া পরিশোধের বিষয়গুলো।
বৈঠকের পর পাকিস্তানি মন্ত্রীর সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করে সরকার। বিকেল সাড়ে চারটায় তিনি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এর বাইরে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ সরকারের উচ্চপর্যায়ের কয়েকজনের সঙ্গে বৈঠকের কর্মসূচি রয়েছে তাঁর।
এ সফরে ইসহাক দার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গেও দেখা করবেন। শনিবার ঢাকায় পৌঁছানোর পরপরই তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, শিক্ষাবিদ ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
উল্লেখ্য, গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ইসহাক দার হচ্ছেন ঢাকায় আগত পাকিস্তানি মন্ত্রিসভার তৃতীয় সদস্য। এর আগে গত জুলাইয়ে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভী এবং গত সপ্তাহে বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান ঢাকা সফর করেছেন।