ভাটিয়ারীতে প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগ

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ১৬ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:০৮ অপরাহ্ণ   |   ১৬০ বার পঠিত
ভাটিয়ারীতে প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগ

কাইয়ুম চৌধুরী,সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:-

 

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী হাজী তোবারক আলী চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কান্তি লাল আশ্চার্যকে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

 


 

বুধবার দুপুরে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ সময় প্রধান শিক্ষক কান্নায় ভেঙে পড়েন।
 

বিদ্যালয়ের নবগঠিত এডহক কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, সকালে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ভাটিয়ারীতে সমবেত হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে। পরে প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়।
 

প্রধান শিক্ষক কান্তি লাল আশ্চার্য ১৯৯১ সালের ১ মার্চ সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন এবং ২০০০ সালে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পান। দীর্ঘদিন সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসলেও সম্প্রতি রাজনৈতিক চাপের মুখে তাকে অপসারণের দাবি ওঠে।
 

গত সোমবার নবগঠিত কমিটির সভাপতির দায়িত্ব নেন জামায়াতপন্থী সাবেক শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। এরপর থেকে বিএনপি সমর্থিত কিছু সাবেক শিক্ষার্থী প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে আন্দোলনে নামে।
 

বুধবার সকালে প্রধান শিক্ষক ও কমিটির সদস্যরা কর্মপরিকল্পনা করছিলেন। এ সময় শতাধিক নেতাকর্মী বিদ্যালয়ে এসে স্লোগান দেয় এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজন জামায়াত কর্মী আহত হন। পরে দুপুর ২টার দিকে প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। শিক্ষার্থীরা জানান, এ সময় শিক্ষককে লাঞ্ছিতও করা হয়।
 

ঘটনার সময় ভাটিয়ারী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি নুরুল আনোয়ার তাকে তার গাড়িতে করে বাড়ি পৌঁছে দেন। অভিযোগ রয়েছে, পথেও প্রধান শিক্ষককে নেতাকর্মীরা হেনস্তা করেন।
 

স্বেচ্ছাসেবক দলের স্থানীয় নেতা খোরশেদ আলম বলেন, প্রধান শিক্ষক ও পুরাতন কমিটির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ছিল। তাই তার পদত্যাগ দাবি জানানো হয়।
 

অন্যদিকে, এডহক কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, "কান্তি লাল আশ্চার্য আমার শিক্ষক। তার প্রতি এমন আচরণ কাম্য নয়। কোনো অভিযোগ থাকলে তা নিয়মতান্ত্রিকভাবে নিষ্পত্তি হওয়া উচিত।"
 

প্রধান শিক্ষক কান্তি লাল আশ্চার্য বলেন, “আমার চাকরির মেয়াদ ২০২৮ সালের মার্চ পর্যন্ত। আমাকে এভাবে অসম্মান করে বিদায় দেওয়ার কোনো প্রয়োজন ছিল না। যারা এমন করেছে, তাদের অনেকেই আমার ছাত্র ছিল। আমি বিচার সৃষ্টিকর্তার ওপর ছেড়ে দিলাম।”