বাম সংগঠনের ১২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ১৩ মার্চ ২০২৫ ১২:৫৩ অপরাহ্ণ   |   ৮৫ বার পঠিত
বাম সংগঠনের ১২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা

ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রায় হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ মামলা দায়ের করেছে। বুধবার রমনা থানার এসআই আবুল খায়ের পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে এ মামলা করেন। এতে বাম সংগঠনের ১২ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও অন্তত ৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

 

মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—

  • বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ
  • বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু ও সাধারণ সম্পাদক মাঈন আহম্মেদ
  • ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা মহানগরের সভাপতি আল আমিন রহমান
  • সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ইডেন মহিলা কলেজ শাখার সভাপতি সুমাইয়া শাহিনা
  • গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহাম্মদ চৌধুরী
  • জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের নেত্রী আদ্রিতা রায়
  • ছাত্র ফেডারেশনের নেতা আরমানুল হক, হাসান শিকদার ও সীমা আক্তার
  • বাম ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে জড়িত মশিউর রহমান রিচার্ড ও অং অং মারমা

 

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম জানান, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় এ মামলা হয়েছে। তবে এখনো কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

 

এজাহারে বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ মিছিলকারীদের বাধা দেয়। তবে তারা পুলিশের অনুরোধ উপেক্ষা করে লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। এতে রমনা জোনের সহকারী কমিশনার আবদুল্লাহ আল মামুন এবং পুলিশ সদস্য রায়হান, কাউছার, রোহান, সাইফুল ইসলাম, রাজারবাগের নারী পুলিশ সদস্য আদিবা ও রুবিনা গুরুতর আহত হন।

 

সম্প্রতি দেশব্যাপী ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে ওঠে। এই সংগঠনের ব্যানারে মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে গণপদযাত্রা আয়োজন করা হয়। তবে পুলিশ হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে তাদের বাধা দিলে সংঘর্ষ বাধে। এ নিয়ে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীরা একে অপরকে দোষারোপ করছে।
 

পুলিশ সদরদপ্তর এক বিবৃতিতে জানায়, বিক্ষোভকারীরা পরিকল্পিতভাবে হামলা চালালে পুলিশ তা প্রতিহত করে। অন্যদিকে, বিক্ষোভকারীদের দাবি, পুলিশ প্রথমে উসকানি দিয়ে পরে হামলা চালায়

 

মামলার আসামি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ফেডারেশনের আহ্বায়ক আরমানুল হক ও মশিউর রহমান রিচার্ড দাবি করেছেন, তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। আরমানুল হক জানান, সংঘর্ষের দিন তিনি দিনাজপুরের খানসামায় অবস্থান করছিলেন।

 

সহকারী পুলিশ কমিশনার আবদুল্লাহ আল মামুনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ইডেন মহিলা কলেজ শাখার সভাপতি সুমাইয়া শাহিনা বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করতে চেয়েছিলাম এবং প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু পুলিশ হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে আমাদের বাধা দিয়ে উসকানি দেয় এবং পরে হামলা চালায়।”
 

এ বিষয়ে ডিসি মাসুদ আলম বলেন, “আন্দোলনকারীরা বারবার বলেছেন তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করবেন, তাই পুলিশের কোনো আক্রমণের পরিকল্পনা ছিল না। কিন্তু পরে দেখা যায়, তারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছেন।”

 

এ ঘটনায় পুলিশের লাঠিপেটার ঘটনায় ক্ষোভ ও বিস্ময় প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু এক বিবৃতিতে পুলিশের ভূমিকার নিন্দা জানান।