জিহাদ হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় পুলিশের ওপর হামলার মামলায় গ্রেপ্তার আতঙ্ক সৃষ্টি হওয়ায় দুটি গ্রামের বেশিরভাগ পুরুষ বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগে গত সোমবার রাতে অন্তত ১০টি বাড়িতে লুটপাট ও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত ২৯ অক্টোবর মাহমুদপুর ইউনিয়নের মরদাসাদী গ্রামের সঙ্গে আগুয়ানদী, গহরদী, উচিতপুরা ও রায়পুরা গ্রামের লোকজনের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে গ্রামবাসীরা ইটপাটকেল ছুড়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হন এবং থানার ওসির সরকারি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়।
ঘটনার পর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে সাতজনকে গ্রেপ্তার করায় উচিতপুরা ও রায়পুরাসহ আশপাশের গ্রামগুলো প্রায় পুরুষশূন্য হয়ে পড়ে।
এই সুযোগে সোমবার রাতে রায়পুরা গ্রামে ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি সশস্ত্র দল আনোয়ার হোসেন, বাবুল মিয়া, আমানুল্লাহ মিয়া, এবাদুল্লাহ মিয়া, মোশারফ হোসেন, নুরু মিয়া, মানিক মিয়া এবং আব্দুস সাত্তারের খালি ঘরে ঢুকে মূল্যবান আসবাবপত্র ও মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
একই রাত আনুমানিক ২টার দিকে পার্শ্ববর্তী রায়পুরা গ্রামের আবুল মিয়া ও সোহেল মিয়ার বাড়িতে দরজা ভেঙে ঢুকে অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়।
উচিতপুরা গ্রামের ভুক্তভোগী আনোয়ার হোসেন জানান, “পুলিশের মামলায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে বেশিরভাগ মানুষ ঘরে তালা দিয়ে আত্মগোপনে চলে গেছে। এই সুযোগে দুর্বৃত্তরা বাড়িতে ঢুকে লুটপাট চালাচ্ছে।”
এ বিষয়ে আড়াইহাজার থানার ওসি খন্দকার নাসিরউদ্দিন দাবি করেন, “পুলিশের মামলার আসামিরা এলাকায় ফেরার জন্য নিজেরাই লুটপাটের নাটক সাজিয়ে থাকতে পারে। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় নিরীহ কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।”
তিনি আরও জানান, লুটপাট বা ডাকাতির বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।