গ্রাম্য সালিশে নারীর চুল কেটে দিলেন স্থানীয় বিচারকরা, উঠছে সমালোচনার ঝড়

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ১০ মে ২০২৫ ১২:১৮ অপরাহ্ণ   |   ১৩৭ বার পঠিত
গ্রাম্য সালিশে নারীর চুল কেটে দিলেন স্থানীয় বিচারকরা, উঠছে সমালোচনার ঝড়

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-

 

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় একটি গ্রাম্য সালিশে এক নারীর মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের উত্তর সাদুল্যা রসুলপুর গ্রামে গত মঙ্গলবার (৬ মে) রাতে এ অমানবিক ঘটনা ঘটে। স্থানীয় একাধিক নিরপেক্ষ সূত্র সালিশ ও চুল কেটে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
 

ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই সালিশি কমিটি একতরফাভাবে আর্থিক জরিমানা করেন এবং মাথার চুল কেটে দেয়। তিনি এ ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করেছেন।
 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই নারী ও তার দেবরের মধ্যকার একটি ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। এর জেরে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি মাইদুল হোসেন গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করেন। সালিশ বৈঠকে মাইদুলের নেতৃত্বে সেকেন্দার আলী, শাহীন মিয়া সহ পাঁচ সদস্যের একটি জুড়ি বোর্ড গঠন করা হয়।
 

সালিশে ‘অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ প্রমাণিত’ হয়েছে দাবি করে দেবরকে ২০ বেত্রাঘাত ও ভাবিকে আর্থিক জরিমানার পাশাপাশি মাথার চুল কেটে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সালিশি বোর্ড। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যুবককে বেত্রাঘাত করা হয় এবং নারীটির চুল কেটে দেওয়া হয়। তবে কত টাকা জরিমানা করা হয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
 

ভুক্তভোগী নারী বলেন, “স্থানীয় মাতবররা অন্যায়ভাবে আমার চুল কেটে দিয়ে সমাজে আমাকে হেয় করেছে। কেউ আমার কথা শুনেনি, আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও দেওয়া হয়নি। আমি এই অন্যায়ের সঠিক বিচার চাই।”
 

ঘটনার পর সাংবাদিকদের উপস্থিতির খবর পেয়ে দেবরসহ সালিশের মূল উদ্যোক্তা মাইদুল গা ঢাকা দিয়েছেন। তাদের মোবাইল ফোন নম্বরও বন্ধ পাওয়া গেছে, ফলে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
 

উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে চুল কেটে দেওয়ার ঘটনা সত্য বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে এখনও ভুক্তভোগী নারী থানায় কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা দেওয়া হবে।”