রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনায় আহতদের জন্য ৫০ লাখ টাকার চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দুপুরে এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানান জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি লেখেন, “উত্তরা মাইলস্টোন স্কুলে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার জন্য জামায়াতে ইসলামী প্রাথমিকভাবে ৫০ লাখ টাকার সহায়তা প্রদান করবে, ইনশাআল্লাহ।”
তিনি আরও বলেন, “আহতদের সুচিকিৎসায় দেশের সব চিকিৎসককে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে মানবতার পাশে দাঁড়ানোর তাওফিক দান করুন।”
এদিকে, জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ভোর ৫টার দিকে ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানান, ৯ বছর বয়সী শিশু বাপ্পি আইসিইউতে মারা যায়। তার শরীরের ৩৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।
এর আগে রাত সোয়া ৩টার দিকে আরও চার শিক্ষার্থীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন ডা. শাওন। নিহতরা হলেন—এরিকসন (১৩), আরিয়ান (১৩), নাজিয়া (১৩) ও সায়ান ইউসুফ (১৪)। তাদের দেহের ৮৫ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত দগ্ধ ছিল।
রাত ১টার দিকে তিনি জানান, এরও আগে আরও চারজনের মৃত্যু হয়। তারা হলেন—অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ, সপ্তম শ্রেণির আফনান ফাইয়াজ, প্রাথমিক বিভাগের প্রধান কো-অর্ডিনেটর মেহেরীন চৌধুরী এবং ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ সামিন। বর্তমানে বার্ন ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ৪১ জন।
তবে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) রাত দেড়টার দিকে জানায়, নিহতের সংখ্যা ২০। পরিচয় শনাক্ত হওয়ায় আটজনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে রাত ৮টার দিকে আইএসপিআরের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত ১৭১ জন রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
উল্লেখ্য, দুপুরে উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুলের একটি ভবনের ওপর বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি জঙ্গি বিমান বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনার সময় ভবনের ভেতরে শিশুদের ক্লাস চলছিল, যা এ প্রাণঘাতী বিপর্যয়ের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে।