গুলিস্তান থেকে যাত্রাবাড়ীর পথে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার থেকে নামতে গেলেও যানজট উঠতে গেলেও যানজট।
কখনও কখনও সে যানজট ফ্লাইওভারের পেছনে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ হয়। ভুক্তেভোগিদের মতে, এ যেনো টাকা দিয়ে ভোগান্তি কেনা। ফ্লাইওভারে গাড়িগুলো ওঠে সময়, জ্বালানী ও ভোগান্তি কমবে বলে। অথচ এর কোনোটাই না
কমে বরং কয়েকগুণ বেড়েছে। ফ্লাইওভার কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা ও পুলিশের অবহেলায় প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। সরেজমিনে ফ্লাইওভারের কুতুবখালী প্রান্তে গিয়ে দেখা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ধরে যে সব লোকাল বাস আসছে ফ্লাইওভারের প্রবেশমুখে সেগুলো যাত্রী ওঠানামা করানোর জন্য দাঁড়াচ্ছে। এতে করে ফ্লাইওভারের প্রবেশমুখে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। একই স্থানে আবার রাস্তা পারাপারের ব্যবস্থা থাকায় কিছুক্ষণ পর
পর ফ্লাইওভারের কর্মীরা রাস্তা বন্ধ করে যাত্রী পারাপার করছে। তাতেও অনেক যানবাহন আটকা পড়ছে। আবার যে সব গাড়ি ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে যাবে সেগুলো সরু রাস্তায় যেতে গিয়ে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে সব মিলে ফ্লাইওভারের কুতুবখালী প্রান্তে দিন রাত ২৪ ঘণ্টাই যানজট লেগে থাকে। ভুক্তভোগি কয়েকজন বলেন, ফ্লাইওভারের মুখে বাস থামার কারণেই মূলত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বাসগুলো ফ্লাইওভারের মুখে না দাঁড় করালে এভাবে যানজটের সৃষ্টি হতো না। শুরু থেকেই ফ্লাইওভারের আয়ের জন্য কর্তৃপক্ষ যাচ্ছেতাই করছে। কোনো নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করছে না। চালু হওয়ার পর পরই ফ্লাইওভারের উপরে বাস স্টপেজ বানানো হয়েছিল। ফ্লাইওভারের মাঝখানে বাস দাঁড়াতে গিয়ে চলন্ত গাড়িগুলোর সমস্যা হতো। শেষ পর্যন্ত উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় বাসস্ট্যান্ড ও সিঁড়ি অপসারণ করা হয়েছে।
একটা গাড়ি ৬০ টাকা থেকে শুরু করে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত টোল দেয় সামান্য পথ নিরাপদে যাওয়ার জন্য। সেখানে ফ্লাইওভারে উঠতে এবং নামতে যানজটে পড়তে হবে এটা কেউ কী মেনে নিতে পার। হানিফ ফ্লাইওভারের গোলাপবাগ দিয়ে কমলাপুর বা রামপুরাগামী গাড়িগুলো নামে। অপেক্ষাকৃত কম গাড়ি নামে এদিক দিয়ে। অথচ গোলাপবাগে নামতে গিয়েও প্রতিদিন যানজটে আটকে থাকতে হয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, ফ্লাইওভার থেকে নামার আগেই বাসগুলো দাঁড় করিয়ে যাত্রী নামানো হয়। এতে করে পেছনের দিকে যানবাহনের দীর্ঘ সারি থেকে যানজটের সৃষ্টি হয়। একই সময় ফ্লাইওভারের মুখেই নিচের রাস্তার গাড়িগুলো ঘুরানো হয়। দুটো মিলে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। আশ্চর্যের বিষয় হলো ফ্লাইওভারের নামার মুখেই ট্রাফিক পুলিশ ডিউটি করে। সাথেই উপ-পুলিশ কমিশনারের (ওয়ারী) কার্যালয়। পুলিশের সামনে যানজটের সৃষ্টি হলেও পুলিশ বরাবরই নীরব থাকে। কয়েকজন ভুক্তভোগির অভিযোগ, ফ্লাইওভার কর্তৃপক্ষ ডিএসসিসিকে ম্যানেজ করে নিচের রাস্তাগুলো সংস্কার করতে দেয়নি। সেই সাথে পুলিশকেও নিস্ক্রিয় করে রেখেছে। একই চিত্র গুলিস্তানে। গুলিস্তানে নামতে গেলে যানজটে পড়তে হবে-এটা যেনো নির্ধারিত বিষয়। এখানেও ফ্লাইওভার অতিক্রম করার আগেই গাড়িগুলো ডান দিকে মোড় নেয়ার নামে দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলে। এতে করে পেছনের গাড়িগুলো আর সামনে এগুতে পারে না। এভাবে ফ্লাইওভারের উপরে কয়েক কিলোমিটার যানজট হয় হরদম। ফ্লাইওভারের ঢাকা মেডিকেল অংশের চিত্র আরও ভয়াবহ। সেখানে এক লেনকে দুই ভাগে ভাগ করে গাড়ি চলাচল করে। নামার আগেই ডানে মোড় নিতে গেলে পেছনের সব গাড়ি এক সাথে দাঁড়িয়ে যায়। আর যে সব গাড়ি সোজা যায় সেগুলো ঢাকা মেডিকেল মোড় পর্যন্ত গিয়ে আটকে থাকে। পুলিশ ফ্লাইওভারের গাড়ি আটকিয়ে নাজিমউদ্দিন রোডসহ পুরান ঢাকার গাড়িগুলো পার করতে ব্যস্ত থাকে। এতে করে ফ্লাইওভারের মুখে ভয়াবহ যানজট লেগেই থাকে।