পঞ্চগড় প্রতিনিধি:-
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঁচ বছর বয়সী এক শিশু ধর্ষণচেষ্টার শিকার হয়ে ভর্তি হলে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আবুল কাশেম। এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ভিডিওতে ওই চিকিৎসককে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে উচ্চস্বরে দুর্ব্যবহার করতে দেখা যায়। এই ঘটনাকে অনেকেই চিকিৎসকের পেশাগত নীতি-নৈতিকতার পরিপন্থী বলে মন্তব্য করছেন। এ ঘটনায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভিডিওটি গত বৃহস্পতিবার দুপুরের, যা পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে ধারণ করা হয়েছিল। রোগীর স্বজনদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তারা ধর্ষণচেষ্টার মামলা করতে দেরি করেছিলেন, আর এ কারণেই ওই চিকিৎসক তাদের সঙ্গে এমন আচরণ করেছেন। ঘটনার রাতেই অভিযুক্ত চিকিৎসককে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
ভুক্তভোগী শিশুটির পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তাদের পাঁচ বছরের মেয়েকে প্রতিবেশী কণিক রায় নামের এক তরুণ খেলনা ও চকলেট দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে পাশের একটি হলুদ ক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। শিশুটির চিৎকারে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে। প্রথমে স্থানীয়ভাবে তার চিকিৎসা করানো হলেও, পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং সেখান থেকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শিশুটির বাবা বলেন, “মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে ব্যস্ত থাকায় আমি মামলা করতে পারিনি। বুধবার রাতে দেবীগঞ্জ থানায় মামলা করি, কিন্তু রাত হওয়ায় মামলার কপি পাইনি। পরদিন বিকেলে নিতে বলা হয়। সকালে আমি হাসপাতালে গেলে দুপুরে ওই ডাক্তার এসে মামলার কপি চান। কপি হাতে পাইনি বলায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে আমাকে গালাগালি করেন এবং হাসপাতাল থেকে মেয়েকে নিয়ে চলে যেতে বলেন। সবার সামনে এমন দুর্ব্যবহার আমাকে খুবই কষ্ট দিয়েছে।”
ডা. মোজাম্মেল হক নাহিদ নামের একজন চিকিৎসক এই ঘটনার ভিডিওর নিচে মন্তব্য করেছেন, “চিকিৎসা বিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় বিদ্যা হলো রোগীর কাউন্সেলিং। রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে চিকিৎসকের এমন ভাষা ব্যবহার করা উচিত নয়। কিছু মানুষের কারণে পুরো চিকিৎসক সমাজকে দোষারোপের শিকার হতে হয়।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. আবুল কাশেম বলেন, হাসপাতালে প্রচুর রোগীর চাপ ছিল। সবাইকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে অপ্রত্যাশিতভাবে এই ঘটনাটি ঘটে গেছে। নিজের ভুল স্বীকার করে তিনি এ ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন।