ঢাকা প্রেস,নোয়াখালী প্রতিনিধি:-
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক গৃহবধূকে সড়কের মধ্যে ছুরিকাঘাতে হত্যার প্রধান আসামি সাইফুল সাইফুল্ল্যাহ ওরফে খালেদকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে তাকে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এর আগে সোমবার, নরসিংদীর মনোহরদী থানার মৌলভীবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত খালেদ নোয়াখালীর চৌমুহনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চিরণ ভূঁইয়ার নতুন বাড়ির আব্দুল কাইয়ুম লিটনের ছেলে। নিহত গৃহবধূ শাহনাজ আক্তার পিংকি (৩০) একই এলাকার বাসিন্দা এবং কুয়েত প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী। তিনি দুই সন্তানের জননী ছিলেন।
জানা যায়, প্রায় ১৬ বছর আগে পিংকির সাথে জাহাঙ্গীরের বিয়ে হয়। খালেদ ছিল পিংকির দূর সম্পর্কের চাচাতো দেবর এবং একই বাড়িতে বসবাস করত। এক বছর আগে পিংকির মোবাইল ফোন নষ্ট হলে, তার বড় ছেলের মাধ্যমে সেটি ঠিক করার দায়িত্ব দেওয়া হয় খালেদকে। খালেদ সেই সুযোগে পিংকির স্বামীর কাছে পাঠানো কিছু ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও নিজের মোবাইলে নিয়ে নেয়। পরে সে এসব ছবি ও ভিডিও দিয়ে পিংকিকে ব্ল্যাকমেইল করে সাত লাখ টাকা আদায় করে এবং পিংকির সাথে শারীরিক সম্পর্কের চেষ্টা চালায়। পিংকি খালেদের প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় খালেদ আরও টাকা দাবি করে এবং ব্যর্থ হয়ে গত ১৭ ডিসেম্বর সকালে চৌমুহনী পৌরসভার হাজীপুর এলাকায় প্রকাশ্যে পিংকিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। এ সময় পিংকির শ্বশুর রেজাউল হককেও (৮০) আক্রমণ করে গুরুতর জখম করে।
ঘটনার পর, খালেদ আত্মগোপনের জন্য ফেনী থেকে ঢাকার কাকরাইল জামে মসজিদে গিয়ে তাবলিগ জামাতে যোগ দেয়। সেখানে তিন দিন কাটানোর পর, সে নরসিংদীর মনোহরদী থানার মৌলভীবাজার এলাকার নলুয়া জামে মসজিদে গিয়ে তাবলিগে অংশগ্রহণ করে। পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে খালেদের অবস্থান সনাক্ত করে। সোমবার, তাবলিগ জামাত শেষ করে অন্য মসজিদে যাওয়ার সময় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল ফারুক জানান, প্রধান আসামি খালেদকে আদালতে হাজির করা হয়েছে এবং অন্যান্য আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।