সন্তানের ইন্টারনেট আসক্তি কমানো জরুরি কেন?

প্রকাশকালঃ ২৮ জুলাই ২০২৪ ১২:৪৯ অপরাহ্ণ ৪৬ বার পঠিত
সন্তানের ইন্টারনেট আসক্তি কমানো জরুরি কেন?

শৈশব বলতে আজকাল আর আগের মত দিগন্ত-জুড়ে বিকেল নেই। এখন শিশুরা ঘরমুখো জীবনযাপনে বেশি অভ্যস্ত। শিশুদের আসক্তি এখন ইন্টারনেটেই বেশি। অনেকে গেমস খেলায় আসক্ত। অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ার প্ল্যাটফর্মগুলোতে আপডেট থাকতে চায়।

 

এছাড়া দেখা যায় বেশিরভাগ শিশুর অবসর মানেই যেন মুঠোফোন। ইদানীং অভিভাবকদের মধ্যেও যে কোন কাজেই শিশুকে ভুলাতে হলে তার হাতে মুঠোফোন ধরিয়ে দেন। এমনকি খাওয়ার অভ্যাসও গড়ে ওঠে রিলস বা ভিডিও দেখতে দেখতে। এমনকি শিশুকে শান্ত রাখতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মুঠোফোনে ইন্টারনেট সচল করে বসিয়ে দেন অভিভাবকেরা।

 

এদিকে দেশে হঠাৎ ইন্টারনেটের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফলে যেসব মা-বাবা সন্তানকে খাওয়ানো, ঘুম পাড়ানো বা অবসর কাটাতে গ্যাজেট ও ইন্টারনেটকেই একমাত্র উপায় মনে করতেন, তারাও বিকল্প খুঁজছেন। এ পরিস্থিতিতে শিশু-বিশেষজ্ঞ ফারহানা ফ্লোরা মনে করেন, এই বিকল্প পথটাই শিশুর জন্য জরুরি। মানে শিশুর গ্যাজেট বা ইন্টারনেটে আসক্তি কমাতে তাকে স্বাভাবিকভাবেই বাস্তব জীবনের সঙ্গে পরিচয় করাতে হবে।


গ্যাজেটে শিশুর আসক্তি কমানো জরুরি কেন

  •  বর্তমান সময়ের এই সুযোগ কাজে লাগাতে না পারলে শিশুদের ইন্টারনেট আসক্তি কমানো সম্ভব হবেনা। যা শিশুদের জন্য অনেকটা ক্ষতিকরও বটে। এর ফলে শিশুর স্বাভাবিক বেড়ে ওঠায় ভয়াবহ প্রভাব পড়বে।

  • মা-বাবা হয়তো নিজেদের সাময়িক সুবিধার জন্য শিশুর হাতে মুঠোফোন দিচ্ছেন, কিন্তু এতে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যায় পড়ে শিশু। মুঠোফোন দেখতে দেখতে খাওয়ার ফলে শিশু কী খাচ্ছে, কেন খাচ্ছে, কোনটার স্বাদ কেমন, এসব শেখার সুযোগ পায় না।

  • এছাড়া অনেক শিশুর দেরিতে কথা বলার সমস্যার কারণ হয়েও দাঁড়ায় এই অতিরিক্ত গেজেট আসক্তি। সাধারণত প্রথম তিন বছর শিশুর মস্তিষ্কের বড় অংশের গঠন হয়। তাই এ সময় শিশু কী শিখছে, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। শিশু সামাজিকতা শেখে না। কার সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হয়, এসব শেখায় ঘাটতি থাকে।

  • কম দূরত্ব থেকে মুঠোফোন দেখার কারণে ডিজিটাল পর্দার বিভিন্ন ক্ষতিকর রশ্মি শিশুর চোখের ক্ষতি করে।

  • একটানা মুঠোফোনে ভিডিও দেখার কারণে শিশুর রাগ বেড়ে যায়। মনোযোগের অভাব দেখা দেয়, ফলে শিশুর মেজাজ খিটখিটে হয় ও অল্পতেই রেগে যায়। নিজের রাগ প্রকাশ করতে গিয়ে জিনিসপত্র ভাঙচুর, চিৎকার ইত্যাদি বাড়িয়ে দেয়।


গ্যাজেট থেকে শিশুকে দূরে রাখতে কী করবেন

  • ইন্টারনেট স্বাভাবিক হলে মুঠোফোন বা গেজেটের জন্য শিশুরা যখন বায়না ধরবে তখন শিশুকে একবারে না করে দেওয়ার চেয়ে আগে বোঝাতে হবে। খাওয়াতে গেলে প্রথমেই তাকে মুঠোফোন না দিয়ে খাবারটা আগে শেষ করানোর প্রতি আগ্রহী করতে হবে। তবে খাওয়ার পর শিশুকে ফোন দিলেও সেটার সময়সীমা বেঁধে দিতে হবে।

  • এছাড়া শিশুর সঙ্গে গল্প ও খেলাধুলা বাড়িয়ে দিতে হবে। তাকে নতুন নতুন বই পড়েও শোনালে সে গেজেট ছেড়ে বইয়ের দিকে ঝুঁকবে।