এনসিপির সাংগঠনিক কার্যক্রম: আহ্বায়ক রাজনীতি চালাবেন, সদস্য সচিব দেখবেন দল

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ০৪ মার্চ ২০২৫ ০২:৩৩ অপরাহ্ণ   |   ৯৭ বার পঠিত
এনসিপির সাংগঠনিক কার্যক্রম: আহ্বায়ক রাজনীতি চালাবেন, সদস্য সচিব দেখবেন দল

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), যা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের নেতাদের দ্বারা গঠিত, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের থেকে ব্যতিক্রমী পন্থায় সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে। দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন, এবং সাংগঠনিক কার্যক্রমের দায়িত্ব পালন করবেন সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
 

অন্য দলে সাধারণত আহ্বায়ক বা সভাপতি সদস্য সচিব বা সাধারণ সম্পাদকের সুপারিশে কমিটি অনুমোদন করেন, কিন্তু এনসিপিতে জেলা-উপজেলা পর্যায়ের কমিটির অনুমোদন করবেন সদস্য সচিব এবং সংশ্লিষ্ট মুখ্য সংগঠক। এনসিপি সূত্র সমকালকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

 

নবগঠিত দলটি আজ মঙ্গলবার সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করবে। এরপর রায়েরবাজার কবরস্থানে চব্বিশের অভ্যুত্থানে শহীদদের কবর জিয়ারত করা হবে। বিকেলে বাংলামটর কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হবে।
 

গতকাল সোমবার, নাহিদ ইসলামের সভাপতিত্বে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়কদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সদস্য সচিবের সভাপতিত্বে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে যুগ্ম মুখ্য সংগঠক এবং উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের সভাপতিত্বে যুগ্ম মুখ্য সংগঠকদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও, মুখ্য সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর সভাপতিত্বে যুগ্ম-মুখ্য সমন্বয়কারীদের সভা অনুষ্ঠিত হয়।
 

এনসিপি সূত্র জানিয়েছে, ২১৭ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটিকে পাঁচটি পৃথক প্যানেলে ভাগ করা হয়েছে। কমিটির আকার ১৫১ সদস্যের হওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও, বিভিন্ন নেতাদের স্থান দেওয়ার জন্য এটি বড় করা হয়েছে, এবং ভবিষ্যতে আরও বড় হতে পারে।
 

গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি, ইসলামী ছাত্রশিবির, ছাত্র অধিকার পরিষদ, মাদ্রাসাভিত্তিক ছাত্র সংগঠন এবং বাম সংগঠন থেকে আসা নেতারা শেখ হাসিনার পতন ঘটানো অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে গঠিত জাতীয় নাগরিক কমিটিতেও নানা মত ও ধারার নেতারা যোগ দেন, যা এনসিপির কমিটিতেও অব্যাহত রয়েছে।
 

দলটির সূত্র জানিয়েছে, বহুমতের সম্মিলন করে বিভেদ হতে পারে, তাই জেলা-উপজেলা পর্যায়ের কমিটি গঠন ও অনুমোদন করবে সদস্য সচিব এবং সংশ্লিষ্ট মুখ্য সংগঠক। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের মুখ্য সংগঠকরা কমিটি গঠন ও অনুমোদনে যুক্ত থাকবেন, এবং সমন্বয়কারী প্যানেল সমন্বয় করবে।
 

এনসিপি'র সাংগঠনিক বিস্তার ও কার্যক্রম পরিচালনা করবে সদস্য সচিব এবং সংগঠক প্যানেল, আর রাজনৈতিক কর্মসূচি নির্ধারণ করবে আহ্বায়ক প্যানেল। সমন্বয়কারী প্যানেল এ কর্মসূচির বাস্তবায়নে সাহায্য করবে। জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন জানিয়েছেন, এসব বিষয়ে আলাপ চলছে এবং চূড়ান্ত হওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।
 

এনসিপি গত ২৮ ফেব্রুয়ারি মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনে আত্মপ্রকাশ করে। দলটি আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে তরুণদের চারটি বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে সাংগঠনিক পরিধি বিস্তৃত করবে।
 

দপ্তর সম্পাদক সালেহ উদ্দীন সিফাত জানান, প্রধান কাজ হবে গঠনতন্ত্র ও ইশতেহার প্রণয়ন, কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, এবং সারাদেশে সাংগঠনিক বিস্তার কার্যক্রম চালানো।
 

এনসিপি ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ এবং নতুন সংবিধান প্রণয়ন উদ্দেশ্য হিসেবে গণপরিষদ নির্বাচনকে লক্ষ্য রেখেছে, তবে চলতি মাসের মধ্যে জেলা-উপজেলায় কমিটি গঠনকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। দলটি ভবিষ্যতে চাঁদাবাজি, দখলবাজি, ঘুষ, দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান নিয়ে আগামী ডিসেম্বরেই নির্বাচন করবে এবং ভারতীয় ‘আধিপত্যবাদ’ বিরোধী অবস্থানও বজায় রাখবে, তাছাড়া আওয়ামী লীগের প্রতি তাদের অনমনীয়তা অব্যাহত থাকবে।