আলোচিত ইসলামী বক্তা মুফতি আমির হামজা তার সাম্প্রতিক বিতর্কিত বক্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন।
তিনি জানান, সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা তাকে রাজনৈতিক বা বিতর্কিত কোনো বক্তব্য থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। হামজা বলেন, “আমি এখন থেকে কেবল কোরআনের তাফসির নিয়েই আলোচনা করব। তুলনা করে কিছু বলতে গেলে অনেক সময় ভুল হয়ে যায়, তাই আর সেসবের মধ্যে যাচ্ছি না।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসিন হল প্রসঙ্গে নিজের মন্তব্যের জন্যও দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। হামজা বলেন, “সলিমুল্লাহ মুসলিম হল বলতে গিয়ে ভুলবশত মুহসিন হলের নাম বলে ফেলেছি। এতে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। ভবিষ্যতে আমি আরও সতর্ক থাকব।”
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মদের বোতল নিয়ে দেওয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি সেখানে ছাত্র থাকাকালে যা দেখেছি তা-ই বলেছি। যদি আমার মন্তব্য ভুল হয়ে থাকে, তবে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। এ বিষয়ে আর কিছু বলব না।”
ভারতের অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানাকে নিয়ে দেওয়া বক্তব্য নিয়েও হামজা অনুতপ্ত। তিনি জানান, মা হাওয়ার সৌন্দর্যের প্রসঙ্গে তুলনা করতে গিয়ে এ কথা বলেছেন। “কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি তার জন্য ক্ষমা চাইছি। ভবিষ্যতে এমন মন্তব্য আর করব না।”
নিজের বক্তব্য নিয়ে সমালোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ওয়াজ করতে গেলে তুলনা করতে গিয়ে ভুল হয়। আওয়ামী লীগের আমলে কারাগারে নির্যাতনের কারণে আমি এখনো মানসিক ও শারীরিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ নই। তাই অনেক সময় কথা বলার সময় ভুল হয়ে যায়। তবে এখন থেকে সতর্ক থাকব।”
মুফতি আমির হামজার বাড়ি কুষ্টিয়ায়। তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-কোরআন ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ থেকে অনার্স-মাস্টার্স করেছেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে তার সাম্প্রতিক কয়েকটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় সমালোচনার ঝড় ওঠে।
বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসিন হলে আজান বন্ধ থাকার দাবি এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে মন্তব্যের পর ছাত্রদলসহ বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিরা তার বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে ক্ষমা চাইতে বলেন। এমনকি ছাত্রশিবিরের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরাও প্রকাশ্যে তার সমালোচনা করেছেন।
এর আগেও রাশমিকা মান্দানাকে নিয়ে দেওয়া মন্তব্য ঘিরে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল, যার জন্য তিনি পরবর্তীতে ক্ষমা চান।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আমির হামজা আড়াই বছর কারাভোগ করেন। ২০২১ সালের ২৪ মে তাকে কুষ্টিয়ার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসি। রিমান্ড ও দীর্ঘ ৯২৫ দিন কারাগারে থাকার পর ২০২৩ সালের ৭ ডিসেম্বর মুক্তি পান তিনি।