আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন নদ-নদীর চরাঞ্চলে আগাম ভুট্টা চাষের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। চলতি বছর জেলার সব উপজেলার কৃষকরাই এ চাষে যুক্ত হচ্ছেন এবং ভালো ফলনের প্রত্যাশা করছেন। গত বছর ভুট্টার ভালো দাম পাওয়ায় চরাঞ্চলের বালুময় জমিতে আগাম ভুট্টা চাষে আরও বেশি উৎসাহী হয়ে উঠেছেন তারা। মাত্র ১০৫ থেকে ১২০ দিনের মধ্যে এই ফসল সংগ্রহ করে একই জমিতে আউশ ধান, পাটসহ অন্যান্য ফসল চাষের পরিকল্পনা করছেন কৃষকরা।
কুড়িগ্রাম জেলা ১৬টি বড় ও ছোট নদ-নদী দ্বারা পরিবেষ্টিত। এর মধ্যে তিস্তা, দুধকুমার, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের মতো প্রধান নদ-নদীর চার শতাধিক চরে ধু-ধু বালুময় জমিতে ভুট্টা চাষ বাড়ছে। অনেক কৃষক আগেভাগেই ভুট্টা রোপণ করেছেন এবং অনুকূল আবহাওয়া ও রোগবালাই কম থাকলে লাভবান হওয়ার আশা করছেন।
চরাঞ্চলের বালুময় জমিতে তুলনামূলকভাবে কম সেচ, সার ও কীটনাশক ব্যবহার করেও ভুট্টার ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে। কৃষকরা আশা করছেন, ১০৫ থেকে ১২০ দিনের মধ্যে ফসল সংগ্রহ করে বাজারজাত করতে পারলে তারা আরও লাভবান হবেন। পাশাপাশি একই জমিতে আউশ ধান ও পাট চাষের সুযোগ পাবেন। সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের কালির আলগা চরের কৃষক হেমায়েত মিয়া জানান, তিনি ১২ শতক জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন এবং ভালো ফলনের আশা করছেন। তার মতে, এই চাষে খরচ কম, ফলন ভালো হলে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি।
কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে সদর, নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী, ফুলবাড়ী, উলিপুর ও রাজারহাটসহ জেলার সব উপজেলায় এবং চরাঞ্চলে বারি হাইব্রিড-৫, বারি হাইব্রিড-৭, বারি হাইব্রিড-৯, ইউনাইটেড-৫৫ হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৬ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে। তবে কৃষকদের ব্যাপক আগ্রহের ফলে এ পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে।
জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, চলতি মৌসুমে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ভুট্টার ভালো ফলন প্রত্যাশিত। তিনি আরও বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি ও উন্নত কৃষি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ভুট্টা চাষ বাড়লে এ অঞ্চলের কৃষকদের জীবনযাত্রার মান আরও উন্নত হবে।