ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসানের বিরুদ্ধে কয়েক কোটি টাকা অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ তদন্তে তাকে তলব করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। তদন্তের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট আরও চারজনকে ডেকেছে কমিশন। তাদের আগামীকাল ৯ জুন বেলা ১১টায় কমিশন ভবনের সভাকক্ষে উপস্থিত থেকে কমিশন গঠিত তদন্ত কমিটির কাছে সাক্ষাৎকার দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে প্রত্যেকের নিজস্ব বক্তব্য ও তদন্তসংশ্লিষ্ট ডকুমেন্টস (যদি থাকে) সঙ্গে রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার কমিশনের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ আলী খান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জানা গেছে, রেজিস্ট্রার আলী হাসানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তকার্য সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার স্বার্থে সংশ্লিষ্ট পাঁচজনকে তলব করেছে কমিশন। তারা হলেন-ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আলী হাসান, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত পরিচালক এবং মেগা প্রকল্পের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রকল্প পরিচালক এইচএম আলী হাসান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী একেএম শরীফ উদ্দীন, সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মুন্সী মো. তারেক, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক এবং মেগা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. নওয়াব আলী এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের উপ-রেজিস্ট্রার রবিউল ইসলাম।
জানা যায়, গত বছরের মে মাসে ইবির রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ফাইল আটকে এবং পছন্দের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দরপত্রের রেট জানিয়ে দিয়ে রূপালী ব্যাংক লিমিটেড কুষ্টিয়া শাখার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা অবৈধভাবে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এছাড়া এ সংক্রান্ত একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হয়। এ ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ গেলে তারা ইউজিসিকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। পরে গত বছরের পহেলা নভেম্বর এ অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করে ইউজিসি। কমিটিতে ইউজিসির এস্টেট অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ও জেনারেল সার্ভিসেসের পরিচালক জাফর আহমদ জাহাঙ্গীরকে আহ্বায়ক করা হয়।
এ সময় একই সঙ্গে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানাবিধ দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে ইউজিসি। পরে ভিসির বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরেজমিন তদন্তকার্য পরিচালনা করে রিপোর্ট জমা দিলেও রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে গঠিত তদন্তকার্য চলমান রয়েছে। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক জাফর আহমদ জাহাঙ্গীর বলেন, ওইদিন তদন্ত কমিটির মিটিং আছে। এজন্য তাদের ডাকা হয়েছে। তদন্ত কেবল শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক এবং মেগা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. নওয়াব আলী বলেন, রেজিস্ট্রার দপ্তরে চিঠি এসেছে। আমাকে ফোন করে জানিয়েছে। কিন্তু ইউজিসি কী বিষয়ে ডেকেছে তা আমি এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।