রৌমারীতে খাদ্যবান্ধব চাল নিয়ে অনিয়ম, ব্যবসায়ীর গোডাউন সিলগালা

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০১:৪৫ অপরাহ্ণ   |   ৩৪ বার পঠিত
রৌমারীতে খাদ্যবান্ধব চাল নিয়ে অনিয়ম, ব্যবসায়ীর গোডাউন সিলগালা

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-


 

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা ও কিছু অসাধু ডিলারের যোগসাজশে নিম্নমানের, দুর্গন্ধযুক্ত এবং ওজনে কম চাল কার্ডধারীদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছিল।
 

এ ঘটনায় বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজ্জল কুমার হালদার হঠাৎ অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে তিনি কয়েকটি ডিলারকেন্দ্র ও খাদ্যগুদাম পরিদর্শন করে অনিয়মের সত্যতা পান। পরে রৌমারী বাজারের চাল ব্যবসায়ী ময়নাল হকের গোডাউনে সরকারি বস্তাসহ নিম্নমানের চাল মজুত পাওয়া গেলে দুটি গোডাউন সিলগালা করা হয়।
 

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৬ ইউনিয়নে ৪১ জন ডিলারের মাধ্যমে প্রায় ১২ হাজার উপকারভোগীকে বছরে ৬ দফায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় চাল দেওয়ার কথা রয়েছে। প্রতিটি কার্ডধারী মাসে ৩০ কেজি চাল পাওয়ার কথা থাকলেও অভিযোগ উঠেছে, ওজনে কম (২৮-২৯ কেজি) চাল দেওয়ার পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রেই তা খাওয়ার অনুপযোগী।
 

দাঁতভাঙ্গা বাজারে চাল নিতে আসা কার্ডধারী ইউনুছ, বকুল মিয়া, ফারুক হোসেন, ইদ্রিস আলীসহ অনেকে অভিযোগ করেন, “নির্ধারিত ৩০ কেজির বদলে কম চাল দেওয়া হয়। আবার চালগুলো দুর্গন্ধযুক্ত ও নিম্নমানের। এ বিষয়ে আপত্তি জানালে ডিলাররা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন।”
 

ডিলাররা অবশ্য পাল্টা অভিযোগ করে জানান, তাদের কাছে যে চাল দেওয়া হয়েছে, তা খাদ্যগুদাম থেকেই নিম্নমানের। সদর এলাকার কিছু ডিলারকে ভালো চাল দিলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলের ডিলারদের নিম্নমানের চাল সরবরাহ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে কথা বলার কারণে তাদের ডিলারশিপ বাতিলের হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।
 

এ নিয়ে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও রৌমারী সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন,
“রৌমারীর সহজ-সরল মানুষকে সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে খাদ্য কর্মকর্তারা ডিলারদের সঙ্গে যোগসাজশে নিম্নমানের চাল বিতরণ করছেন। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।”

 

তবে উপজেলা খাদ্যগুদাম ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল্লাহ দাবি করেন,
“আমার পক্ষ থেকে ভালো চালই দেওয়া হয়েছে। ডিলাররা চাইলে ওই চাল বিক্রি করে নিম্নমানের চাল কিনে বিতরণ করতে পারে।”

 

অভিযান শেষে ইউএনও উজ্জল কুমার হালদার বলেন,
“অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”