চুলের যত্নে মেহেদির উপকারিতা

প্রকাশকালঃ ২০ আগu ২০২৩ ০২:০৫ অপরাহ্ণ ২৯৫ বার পঠিত
চুলের যত্নে মেহেদির উপকারিতা

র্ষাকালে চুল পড়ার সঙ্গে বেড়ে যায় খুশকির সমস্যাও। শুধু তেল বা শ্যাম্পু ব্যবহার করে এ সকল সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। রাসায়নিক রং চুলের ক্ষতি করতে পারে। তাই নিয়ম করে প্রতি সপ্তাহে চুলে মেহেদি পাতা ব্যবহার করুন। প্রাকৃতিক রং হিসাবে মেহেদি পাতা খুবই কার্যকরী। কিন্তু চুলের স্বাস্থ্যের জন্যও যে মেহেদি পাতা ব্যবহার করা যায়, তা হয়তো অনেকেই জানেন না। বর্ষাকালে চুল পড়ার সঙ্গে বেড়ে যায় খুশকির সমস্যাও। শুধু তেল বা শ্যাম্পু ব্যবহার করে এই সকল সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। তাই মেহেদি পাতা ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা।


চুলের গোঁড়া মজবুত করতে
চুল পড়ার সমস্যা নিয়ে নাজেহাল অনেকেই। মাথার চেয়ে মাটিতে চুল পাওয়া যায় বেশি। চুলের প্রয়োজনীয় পুষ্টি হ্রাস পেলে এমন সমস্যায় ভুগতে হয়। বাইরে থেকে চুল চকচকে, মসৃণ হলেও চুলের গোঁড়া মজবুত আছে কি না, সে দিকে নজর রাখা প্রয়োজন। শ্যাম্পু, সিরামের পরিবর্তে এ ক্ষেত্রে মেহেদি পাতা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। সপ্তাহে অন্তত এক দিন মেহেদি লাগালে চুলের পুষ্টি ফিরে আসবে। চুল ভিতর থেকে মজবুত ও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। চুল পড়ার পরিমাণও ধীরে ধীরে কমে যাবে।

প্রাকৃতিক কন্ডিশনার
প্রতিদিনের ধুলো-ময়লায় চুল অতিরিক্ত রুক্ষ হয়ে যায়। চুল কোমল মসৃণ করতে আমরা কত কিছুই না করে থাকি। শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, বাজারচলতি বিভিন্ন প্রসাধনীর ব্যবহার, চেষ্টার কোনও কমতি রাখেন না কেউই। এতে হয়তো প্রাথমিক ভাবে সমস্যার সমাধান হয়। কিন্তু তাতে দীর্ঘস্থায়ী হয় না। তা ছাড়া, রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রিত এসকল প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে চুল আরও রুক্ষ হয়ে পড়ে। চুল সুন্দর ও কোমল রাখতে তাই মেহেদি ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ঘরোয়া বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে বাড়িতেই মেহেদির মিশ্রণ তৈরি করে নিতে বলেছেন। এতে চুলের ক্ষতি হওয়ার কোনও ভয় থাকবে না।


খুশকি দূর করতে
অতিরিক্ত চুল পড়ার আরও একটি কারণ হল খুশকি। চুল পড়ার সমস্যা আটকাতে তাই সবার আগে খুশকি কমানো প্রয়োজন। তার জন্য অনেকেই বিভিন্ন প্রসাধন সামগ্রী ব্যবহার করে থাকেন। অ্যান্টিড্যানড্রাফ শ্যাম্পুও ব্যবহার করে থাকেন। তার পরেও দেখা যায়, বর্ষা বা শীতকাল আসতেই খুশকিতে ভরে যায় মাথা। এই সমস্যার অন্যতম একটি সমাধান হতে পারে মেহেদি। তবে প্রতিদিন মেহেদি দেওয়া সম্ভব নয়, আর ঠিকও নয়। ১৫ দিনে অন্তত দু’বার করে মেহেদি দিলে ভাল ফলাফল পাওয়া যায়।

মাথার ত্বকের পিএইচ ব্যালেন্স (Ph Balance) বজায় রাখে
সাধারণত তৈল ব্যবহারের কারণে কিংবা অন্য অনেক কারণে আমাদের স্কাল্প তৈলাক্ত হয়ে থাকে। যা পিএইচ ব্যালেন্সের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। এক্ষেত্রে মেহেদি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। যখন আমরা মাথায়/চুলে মেহেদি পাতা ব্যবহার করি, তখন সেটি ওভারজেলাস সেবাসেস গ্ল্যান্ড নিয়ন্ত্রণ এর সাথে অয়েল প্রোডাকশন কন্ট্রোল করে। যা আমাদের মাথার ত্বকের পিএইচ মান সঠিক মাত্রায় নিয়ে আসে।

চুলের রুক্ষতা দূর করে
আমাদের যাদের চুলে রুক্ষতা তুলনামূলক একটু বেশি, সেক্ষেত্রে মেহেদি দ্বারা উপকৃত হতে পারি। এটা আমরা দুই ভাবে ব্যবহার করতে পারি। প্রথমটি হলো- বাটা মেহেদি পাতার সাথে অলিভ অয়েল এবং সাথে ভিটামিন ই ট্যাবলেট মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুণ। এরপর উক্ত মিশ্রণটি চুলে প্রলেপ দিন। এভাবে আপনি সপ্তাহে একবার করে ব্যবহার করতে পারেন।
অন্য পদ্ধতিটি হলো- বাটা মেহেদির সাথে ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে এবং তাতে পুনরায় পরিমাণ মতো টক দই মিশিয়ে একটি ভালো মিশ্রণ তৈরি করুণ। মিশ্রণটি তৈরির পর এবার সেটি আপনার চুলে ভালোভাবে প্রলেপ করুন এবং ২০-২৫ মিনিট পর তা ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
মূলত উপরোক্ত এই দুই পদ্ধতি অবলম্বন করার মাধ্যমে আপনি চুলের রুক্ষতা ও চুলের আগা ভেঙ্গে যাওয়া হতে মুক্তি পেতে পারেন।


চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে
চুলের ঘনত্ব বলতে নতুন চুল গজানোকে বোঝানো হয়েছে। আমাদের অধিকাংশেরই চুল অনেক পাতলা। হোক সেটা জন্মগত কিংবা নানা ধরনের বহুমুখী কারণে। এখন এই পাতলা চুলকে আমরা মেহেদি পাতা ব্যবহারের মাধ্যমে ঘন করে তুলতে পারি। অর্থাৎ নতুন চুল গজাবে। প্রতি সপ্তাহে একবার করে মেহেদি পাতার মিশ্রণ আপনার চুলে ব্যবহার করুণ। এতে আপনার মাথার ত্বকে নতুন চুল গজানোর জন্য পরিবেশ তৈরি হবে। এভাবে কয়েকবার ব্যবহার করুণ।

চুল পড়া রোধ করে
চুলের নানামুখী সমস্যাগুলোর মধ্যে চুল পড়া হলো অন্যতম। অনেক কারণেই চুল পড়ে থাকে। হরমোন, বংশগত সমস্যা, কোষ মরা সহ ইত্যাদি কারণ। আমরা কিন্তু মেহেদি পাতা ও অলিভ ওয়েল ব্যবহার করে এই সমস্যা হতে খানিকটা হলেও মুক্তি পেতে পারি। প্রথমে মেহেদি পাতাগুলো খুব ভালোভাবে পিষতে হবে এবং সেটার সাথে সামান্য পরিমাণ অলিভ অয়েল যোগ করতে হবে। এরপর মিশ্রণটি চুলে লাগিয়ে ২৫-৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে সপ্তাহে একবার করে ব্যবহার করুণ। তবে এখানে বিশেষ দ্রষ্টব্য হলো অবশ্যই খালি পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কোনো ধরনের শ্যাম্পু বা কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন না। যদি একান্ত ব্যবহার করতেই চান, তাহলে মেহেদি দেওয়ার এক-দুদিন পর ব্যবহার করুণ। এভাবে মেহেদি পাতা ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি চুল পড়া রোধ করতে সক্ষম হবেন।