হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে লাগা ভয়াবহ আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও এখনও সম্পূর্ণ নেভানো সম্ভব হয়নি। অগ্নিকাণ্ডের ২১ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও দূর থেকে এখনো ধোঁয়া উড়তে দেখা যাচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দুই পাশ থেকে পানি ছিটিয়ে আগুন নিভানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি উদ্ধারকাজও চলছে জোরেশোরে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও কাজ করছেন ঘটনাস্থলে।
রোববার সকাল ১১টার দিকে কার্গো ভিলেজ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আগুনের দগদগে ছাপ এখনো রয়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম জানান, “আগুন পুরোপুরি নির্বাপণ সম্ভব হয়নি এখনো। কবে নাগাদ শেষ করা যাবে, তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।”
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার মো. মুহিদুল ইসলাম বলেন, “ফায়ার সার্ভিস এখনও উদ্ধারকাজে নিয়োজিত আছে। নিরাপত্তার স্বার্থে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।”
এর আগে শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুর ২টা ১৫ মিনিটের দিকে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন লাগে। আগুন লাগার পরপরই বিমান বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ উদ্ধার ও নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা শুরু করে। কিন্তু মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো কমপ্লেক্সজুড়ে, পরিস্থিতি হয়ে ওঠে ভয়াবহ।
অগ্নিকাণ্ডের কারণে কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হয় বিমানবন্দরের ফ্লাইট চলাচল। পরে রাত ৯টার দিকে আগুন আংশিক নিয়ন্ত্রণে আসলে আবার সচল হয় ফ্লাইট। ফায়ার সার্ভিস রাতেই জানায়, আগুন নতুন করে ছড়ানোর আশঙ্কা নেই, তবে সম্পূর্ণ নির্বাপণ সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় আনসার বাহিনীর ২৫ জনসহ মোট ৩৫ জন আহত হয়েছেন।
কার্গো ভিলেজের যেই অংশে আগুন লাগে, সেখানে মূলত আমদানি করা পণ্য রাখা হয়। অগ্নিকাণ্ডে বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা না হলেও আগুনের উৎস ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। কমিটিগুলোকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শনিবার রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, আগুনের পেছনে কোনো নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
চেষ্টার পরও আগুনের ধোঁয়া ও পুড়ে যাওয়া গন্ধে এখনো ভারী হয়ে আছে শাহজালাল বিমানবন্দরের আকাশ।